ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

ছাত্রলীগ কোনো অপকর্মে জড়িত ছিলো না, থাকবেও না

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৮
ছাত্রলীগ কোনো অপকর্মে জড়িত ছিলো না, থাকবেও না বাংলানিউজের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন সাইফুর রহমান সোহাগ

ঢাকা: আগামী ১১ ও ১২ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের ২৯তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন। বরাবরের মতোই এ সম্মেলনেও নতুন নেতৃত্ব আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বয়সের বাধায় ছাত্রলীগ ছাড়তে হচ্ছে বর্তমান অর্থাৎ ২৮তম কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগকে। তবে সম্মেলন ঘিরে তুমুল ব্যস্ততায় সময় কাটছে এই নেতার। এর মাঝেই আগামীর নেতৃত্বের কাছে প্রত্যাশা, নিজের পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন সাইফুর রহমান সোহাগ

বাংলানিউজ: কেমন নেতৃত্ব আসছে আগামীর সম্মেলনে?
সোহাগ: সম্মেলন মানেই নতুন নেতৃত্বের সন্ধান। আমরা সেটা নিয়েই কাজ করছি।

বিভিন্ন জেলায় জেলায় সম্মেলন নিয়ে এখন প্রচণ্ড ব্যস্ততা। তবে আমাদের সম্মেলনের মূল মন্ত্র, বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী, দেশরত্ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়ন। আগামীর সমৃদ্ধির বাংলাদেশ। মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ থেকে ২০৪১ সালের আগেই উন্নত সমদ্ধ বাংলাদেশ।

বাংলানিউজ: সম্মেলন ঘিরে লক্ষ্যটা?
সোহাগ: জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমেই যে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব- এটা আজ কেবল দেশেই নয়, সারাবিশ্বে প্রমাণিত। আগামী সম্মেলনে নতুন যে নেতৃত্ব আসবে, তাদের লক্ষ্যই থাকবে সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নেতৃত্ব জননেত্রীকে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী করেই ঘরে ফিরতে পারবে। এটা নিয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।

বাংলানিউজ: পদ-পদবি পাওয়ার ব্যাপারে অনেক সংগঠনে অর্থের লেনদেন হয়, এক্ষেত্রে ছাত্রলীগের পার্থক্য কী?
সোহাগ: ছাত্রলীগ করতে টাকা পয়সা লাগে না। আর একমাত্র এই সংগঠনেই কোনো অর্থ লেনদেনের চর্চা নেই।

বাংলানিউজ: সম্মেলন ঘিরে পুরনোদের ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন কি?
সোহাগ: আমার ক্ষেত্রে অন্তত সেই সুযোগ নেই। কাউন্সিলরদের ভোটেই নতুন নেতৃত্ব আসবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নেতৃত্ব নতুনদের হাতেই ছেড়ে দিতে হবে। ছাত্রলীগ করার যে বয়স, সেটাও আমার শেষ।

বাংলানিউজ: বর্তমানে ছাত্রলীগের সক্ষমতা কেমন?
সোহাগ: পৃথিবীর কোনো ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে কেউ ছাত্রলীগের তুলনা করতে পারবেন না। তার একমাত্র কারণ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, সবশেষ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন, তার সবকিছুতেই ছিলো ছাত্রলীগের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এই সফলতার ধারাবাহিকতা চলছে তারই কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আজ জননেত্রীর নির্দেশনায় দেশ উন্নয়নে, যুবসমাজ গঠনেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ছাত্রলীগ।

বাংলানিউজ: নিজের দায়িত্ব পালনের সময়ে ছাত্রলীগের বড় অর্জন কোনটি?
সোহাগ: আমাদের অর্জন কিন্তু অনেক কিছু। এক একটা করে বলতে গেলে ফিরিস্তি দীর্ঘ হবে। আমরা চেয়েছি, বঙ্গবন্ধু যেভাবে স্বপ্ন দেখেছেন, প্রধানমন্ত্রীর যেভাবে নির্দেশনা আর অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, সবকিছুর সমন্বয়ে অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন। ছাত্রলীগের সব অর্জনই বড়। প্রতিটি কাজই বড়। কোনো কাজকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ ছাত্রলীগ কাজ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনা আর অনুপ্রেরণায়। যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপই নেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আর পরামর্শে, সেখানে প্রতিটি কাজই আমাদের কাছে বড়।

বাংলানিউজ: নিজের নেতৃত্বের অর্জন?
সোহাগ: ছাত্রলীগকে সুশৃঙ্খল একটি পরিবারে পরিণত করেছি। সামর্থ্যে শতভাগ সক্ষম করেছি। সবার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আর্দশ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করানোর চেষ্টা করেছি।

বাংলানিউজ: ব্যর্থতা?
সোহাগ: আমাদের কোথাও কোনো ব্যর্থতা ছিলো না। যদিও থাকে সেটা আমার জানা নেই। মূল্যায়ন করবে আমার দেশের মানুষ।

বাংলানিউজ: সম্মেলন এলেই আঞ্চলিকতা, ইজম, গ্রুপিং প্রকট হয়ে ওঠে, কমিটি নিয়েও তো প্রশ্ন ওঠে!
সোহাগ: ছাত্রলীগে কোনো আঞ্চলিকতা, ইজম, সিন্ডিকেট বা গ্রুপিং নেই। আমাদের রয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই আমাদের সবকিছু।

বাংলানিউজ: কিন্তু ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীর নেতিবাচক কর্মকাণ্ডও তো অতীতে বহু সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। মূল দল বিব্রত হয়েছে। নিজেদের মধ্যে কোন্দল, হানাহানি, খুনোখুনি- এগুলো নিয়ে কী বলবেন?
সোহাগ: এসব খবর কে দিয়েছে? আপনারা সাংবাদিকরা দিয়েছেন। এসব ঘটনার কোথাও আমাদের ছাত্রলীগ ছিলো না। ছাত্রলীগ অতীতে কখনোই কোনো অপকর্মে জড়িত ছিলো না। ভবিষ্যতেও থাকবে না। আর যারা অপকর্ম করে, দেশবিরোধী কাজ করে, তারা কী করে ছাত্রলীগ করতে পারে! ছাত্রলীগের সঙ্গে ঘুরলেই তো আর ছাত্রলীগ হওয়া যায় না। ছাত্রলীগ করতে হলে প্রথমেই যেটা দেখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তার মাঝে আছে কি-না।

বাংলানিউজ: কিন্তু বেপরোয়া কর্মকাণ্ড আর সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে একটি সময়ে দেখা যায় ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটিকে। ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে বিরক্ত হয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক প্রধানের পদ থেকে সরে যান।
সোহাগ: কখনোই প্রধানমন্ত্রী এটা বলেননি। বিরক্ত প্রকাশ করেননি। আমাদের শাসন করেছেন।

বাংলানিউজ: নিজের অভিজ্ঞতা কী বলে? বলতে চাইছেন, অন্যায় বা অপরাধ করেছেন- এমন কেউ ছাত্রলীগে নেই?
সোহাগ: না নেই। যদি কেউ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে থেকেও থাকে, তাদের ছাটাঁই করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad