ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো: মওদুদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৮
প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো: মওদুদ আলোচনা সভায় মওদুদ আহমদ-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: যেসব নেতারা বেশি গণতন্ত্রের কথা বলেন, তাদের নির্বাচনী এলাকায় বিরোধী দল ঘরোয়া বৈঠকও করতে পারেন না। এ কথাগুলো যদি কেউ অসত্য প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো।  

শনিবার (১৭ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘কয়েকটি কথার উত্তর দেওয়ার দরকার।

....আজ নতুন খবর পেলাম, যেটা এতদিন সন্দেহ করে আসছিলাম। নির্বাচনের একটা নীল নকশা সরকার করেছে। সে নীল নকশাটা হলো বিরোধী দল যাতে না থাকে। তাদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। আওয়ামী লীগ এককভাবে আবার এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে যাতে করে কোনো দল আর নির্বাচনে না আসে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরও একটা নির্বাচন করবে। সেটা খোলামেলা বলেই দিয়েছে। তাদের একজন নেতা বলেই দিয়েছেন। ’

মওদুদ আহমদ আরও বলেন, বিজয় তাদের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তার মানে নীল নকশা অনুযায়ী নির্বাচন হয়ে গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা। গেজেট নোটিফিকেশন হবে। আর শপথ গ্রহণ হবে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। এতদিন আমরা যে সন্দেহ করে আসছিলাম আজ তারা অজ্ঞাতেই হয়তো মনে যা আছে সেটা বলে ফেলেছে। কিন্তু ধরা পড়ে গেছে। দেশের মানুষের কাছে ধরা পড়ে গেছে।

এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মওদুদ বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের মাটিতে হতে দেওয়া হবে না। এ নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আজ মার্চ মাসে বলছেন সব হয়ে গেছে। আনুষ্ঠানিকতা বাকি। বিরোধী দলে যারা আছেন আপনারা বাড়ি চলে যান। ’

বর্তমান রাজনীতি পরিস্থিতি নিয়ে সাবেক এ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখন চলছে মিথ্যাচারের রাজনীতি। ...তারা ভাঙচুরের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ২০০৬ সালে তারা লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে ৬/৭ জন মানুষ হত্যা করে নৃত্য পরিবেশন করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আনার জন্য ১৭৪ দিন হরতাল দিয়েছে। কত শত শত গাড়ি, প্রাইভেট কার, বাস পুড়িয়েছে। শেরাটনের মোড়ে বাস পুড়িয়ে ১৪ জনকে হত্যা করেছে। এটাও ভুলে গেছে। আমাদের দোষ দেন। .....এটা হলো মিথ্যাচারের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ’ 
 
সরকারদলীয় নেতাদের সমালোচনা করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘যারা বেশি গণতন্ত্রের কথা বলে আপনারা (সাংবাদিকরা) তাদের এলাকায় যান ...আপনারা কি দৃশ্য দেখবেন আমি বলি, নিজেদের এলাকায়-প্রথম হলো তারা ভোটে নির্বাচিত হয়নি। নিজেদের এলাকায় বিরোধী দলকে কোনো ঘরোয়া বৈঠক পর্যন্ত করতে দেন না। ঢাকায় বসে সংবাদপত্রে আপনাদের সামনে বলছে দেশে গণতন্ত্র চলছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং  অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। ’

‘...আমি যে কথাগুলো বলছি এটা যদি কেউ বলে, কেউ এটা অসত্য বলতে পারে, প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। এ কথাগুলো সত্য অতি সত্য। ’
 
তিনি বলেন, ‘বিশ্বময় স্বৈরাচার সরকারের যেমন পতন হয়েছে, বর্তমান সরকারের পতনও একইভাবে হবে। এটা ইতিহাসের অবধারিত পরিণতি। এখান থেকে কেউ নিস্তার পায়নি। এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। ’
 
খালেদা জিয়ার কারাবাস নিয়ে মওদুদ বলেন, ‘কারাগার থেকে যেদিন বেরিয়ে আসবেন সেদিন থেকে বাংলাদেশের মানুষ রাজপথে নেমে আসবে। সেই জোয়ারে বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্র ফিরে আসবে। এ সরকারের আতঙ্ক সেটাই। সে আতঙ্ক আমাদের দূর করতে হবে বিজয়ের মাধ্যমে। ’    
 
নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা নাছির উদ্দিন হাজারী। বক্তব্য দেন সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, বিএনপি নেতা আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৮
ইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।