ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

যে প্রক্রিয়ায় খালেদার কারামুক্তি মিলবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৮
যে প্রক্রিয়ায় খালেদার কারামুক্তি মিলবে খালেদা জিয়া

ঢাকা: জামিন পেলেও কারামুক্তিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আরও কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে।

সোমবার (১২ মার্চ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট।

এখন জামিন আদেশে বিচারকদের স্বাক্ষরের পর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হবে।

তারপর এটি নিম্ন আদালতে যাবে।  

এদিকে খালেদার আইনজীবীরা একটি সার্টিফাইড কপি তুলে নিম্ন আদালতে বেইল বন্ড দাখিল করবেন। এরপর রিলিজ আদেশ কারাগারে পাঠাবেন আদালত। তারপর কারা কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবে।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, দীর্ঘ এক মাসের বেশি কারাবাসের পর তিনি আজ জামিন পেয়েছেন। তার জামিনে মুক্তিতে আইনগত আর কোনো বাধা নেই। এখন বিচারপতিরা আদেশে সই করার পর নিম্ন আদালতে যাবে। নিম্ন আদালতে বেইল বন্ড দাখিলের পর ওই আদালত রিলিজ অর্ডার কারাগারে পাঠাবেন।

তবে হাইকোর্টের এ জামিনের বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করার কথা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশন।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, আমরা জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করলেও হাইকোর্টের আদেশ যাওয়ার পরে কারামুক্তির প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে না। তবে যদি চেম্বার আদালত জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দেন তাহলে মুক্তি আটকে ‍যাবে।

আদালতে খালেদার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

জামিন আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে আপিল শুনানির জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাকে পেপারবুক প্রস্তুত করতেও নির্দেশ দিয়েছেন। পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ার পর যেকোনো পক্ষ চাইলে আপিল শুনানির জন্য আদালতে মেনশন (উপস্থাপন) করতে পারবে।

নিম্ন আদালতের পাঠানো এ মামলার ৫ হাজার ৩৭৩ পৃষ্ঠার নথি পৌঁছানোর পর সোমবার (১২ মার্চ) দুপুরে আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনতে চান। এরপর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও শুনানিতে অংশ নেন।

এর আগে রোববার (১১ মার্চ) জামিনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকলেও মামলার নথি এসে উচ্চ আদালতে না পৌঁছায় তা একদিন পিছিয়ে সোমবার দিন ধার্য করা হয়।  

গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদার আইনজীবীদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। সেদিন খালেদার জরিমানা স্থগিত করে বিচারিক আদালতের নথি ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর জামিন আবেদনের শুনানি শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের যে নথি ১৫ দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে; সে নথি আসার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর আদেশের সময় নির্ধারণ করেছিলেন।

এর মধ্যে ৮ মার্চ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে নথি নিয়ে আদালতের আদেশের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে খালেদার আইনজীবীরা একটি মেনশন স্লিপসহ আবেদন উপস্থাপন করেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদাপুত্র ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে দণ্ড দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার ১১দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি এ আবেদন দায়ের করেন।  

সাজা ঘোষণার পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৮ 
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।