ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

এজলাসে উত্তেজনা, উঠে গেলেন বিচারক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এজলাসে উত্তেজনা, উঠে গেলেন বিচারক আদালতে খালেদা জিয়া/ ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে আনা নিয়ে এজলাসে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়েছে। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় থামাতে না পেরে এজলাস ছেড়ে চলে যান বিচারক। 

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৫-এ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।  

এ সময় মামলার আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার আসামি খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্নার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন তার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। শুনানির একপর্যায়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফরের প্রসঙ্গে টেনে আনেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সিলেটে জনসভায় ভাষণ দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর কাজ কি না।

শুনানির শুরুতে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের বক্তব্যের সূত্র ধরে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলতে থাকেন, ‘দুদক বলছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে কোনো কাজ হয়নি। অথচ কাকরাইলে ৪২ কাঠা জমি ট্রাস্টের নামে কেনা হয়েছে। এটা কি খালেদা জিয়ার নামে করা হয়েছে? না, এটা ট্রাস্টের সম্পত্তি। ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি এই জমি কেনা হয়। ২০০৫ সালের পর বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি সহিংস আন্দোলন হয়। এরপর ক্ষমতা গ্রহণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। দুদকের আইনজীবী বলছেন, ২০০৫ সালের পর এই ট্রাস্টে কোনো লেনদেন হয়নি। এমন সহিংস আন্দোলনের পর লেনদেনের সুযোগ দিলেন কোথায়? ট্রাস্টের নামে জমি আছে, ভবন আছে, আর কী করতে হবে? দুদকের আইনজীবী হাস্যকর খোঁড়া যুক্তি দেখিয়েছেন। ’

মঙ্গলবার যুক্তিতর্কের শুনানির সময় দুদকের আইনজীবী বলেছিলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাবে খালেদা জিয়া তার প্রধানমন্ত্রীর পদ গোপন করেছিলেন। আবার ট্রাস্টের ঠিকানা তিনি দিয়েছেন মইনুল হোসেন রোডের। দুদকের আইনজীবীর এই বক্তব্যের সূত্র ধরে আমিনুল ইসলাম পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ট্রাস্টের হিসাবে কেন প্রধানমন্ত্রীর পদ লিখবেন? প্রত্যেক মানুষের দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত কাজ আছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সিলেটে গিয়ে যে ভাষণ দিয়ে এসেছেন, সেটা কি প্রধানমন্ত্রীর কাজ? তিনি তো তা-ই করে এসেছেন। ’

আইনজীবী আমিনুল ইসলামের এই মন্তব্যের পরপরই দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল দাঁড়িয়ে বলতে থাকেন, ‘উনি (আমিনুল ইসলাম) তো সক্রেটিসের মতো কথা বলছেন। উনি তো আইনস্টাইন হয়ে গেছেন। এর নাম কি যুক্তিতর্ক? কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ আদালতে টেনে আনছেন?’

দুজনের বাগবিতণ্ডার এই পর্যায়ে দুই পক্ষের কয়েকজন আইনজীবীও এতে যোগ দেন।

এ সময় আদালতের বিচারক আখতারুজ্জামান আমিনুল ইসলামের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘আপনি মামলার প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করুন। ’ তারপরও দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা চলতে থাকলে বিচারক দুপুর ১২টার দিকে এজলাস ত্যাগ করেন। তবে সাত মিনিট পর তিনি আবার এজলাসে ফিরে আসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।