ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

২০ দলের শরিক জমিয়তে ভাঙন, খালেদার দরবারে নালিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
২০ দলের শরিক জমিয়তে ভাঙন, খালেদার দরবারে নালিশ ওয়াক্কাস ও কাসেমী।

ঢাকা: দলীয় কোন্দলে ভেসে গেলো ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম! একে অপরের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ এনে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে আনলে দলটিতে এ ভাঙন দেখা দেয়।

এখন দলের মধ্যেই চলছে ‘বহিষ্কার পাল্টা বহিষ্কার’ খেলা। তবে এ ভাঙন ঠেকাতে উদ্যোগী হয়েছেন ২০ দলের নেত্রী খালেদা জিয়া।


 
দলীয় সূত্র জানায়, শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলীয় সভাপতি মাওলানা শায়েখ আবদুল মোমিন।  

বৈঠকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নুর হোসেন কাসেমী পন্থিরা দলটির সহ-সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ আনেন। এর প্রেক্ষিতে মুফতি ওয়াক্কাসের নির্বাহী সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।  
 
এদিকে সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মজলিসে আমেলার জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে সাংগঠনিক স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম এবং গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজের অভিযোগ এনে জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক ও সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফীকে দলের সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেন মুফতি ওয়াক্কাস পন্থিরা।
 
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৭ নভেম্বরের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগে দলের মহাসচিব পদে কাকে নির্বাচিত করা হবে এ নিয়ে কাউন্সিলররা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন। তারপর কাউন্সিলের আগের রাতে বারিধারা মাদ্রাসায় ওয়ার্কিং কমিটির সভা হয়।  

সভায় সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী, দলে মুফতি ওয়াক্কাসকে নির্বাহী সভাপতি এবং মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর গত ৭ নভেম্বর আজিমপুর কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে এ শর্তেই পরবর্তী ৩ বছরের জন্য ওয়াক্কাসকে নির্বাহী সভাপতি ও কাসেমীকে মহাসচিব ঘোষণা করা হয়।
 
কিন্তু কাউন্সিলের পর থেকেই নবনির্বাচিত মহাসচিব মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুল্লাহ ফারুক এবং মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে- তারা সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস ও কমিটির আরও কয়েকজন দায়িত্বশীলকে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে সুকৌশলে দূরে সরিয়ে রাখছেন।  

বিষয়টি নিয়ে কাসেমীসহ অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের জানালেও কোনো কাজ হয়নি। আর এর সূত্র ধরেই দলে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানালেন একাধিক নেতারা।  
 
ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা অনিয়মের ব্যাপারে বারবার কেন্দ্রীয় সভাপতিকে অবগত করলেও তিনি এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।  

এদিকে দ্বিধা-বিভক্ত উভয়পক্ষ শনিবার রাতে ২০ দলের নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন।  পৃথকভাবে ওইদিন রাতে খালেদার সঙ্গে বৈঠকও করেন তারা।  

উভয়পক্ষের সঙ্গে বিএনপি প্রধানের বৈঠকের সময় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন।  
বৈঠক শেষে উভয়পক্ষের নেতারা জানান, চলমান পরিস্থিতি খালেদা জিয়ার সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আরও দুই-তিনদিন অপেক্ষা করতে বলেছেন তিনি। আবারও তাদের সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন খালেদা।
 
যোগাযোগ করা হলে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘অচিরেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। পরবর্তীতে কার্যক্রম ও জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের কমিটি পুনর্গঠনের দিন তারিখ ঘোষণা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।