ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

এমপি এনামুলের হাত থেকে তৃণমূল আ’লীগকে রক্ষার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
এমপি এনামুলের হাত থেকে তৃণমূল আ’লীগকে রক্ষার দাবি বাগমারা উপজেলা আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহী: রাজশাহী-৪ বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের হাত থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগকে রক্ষার দাবি জানিয়েছে ‘বাগমারা উপজেলা আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ’।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর একটি রেস্তরাঁয় বাগমারা উপজেলা আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বরাবরা এ দাবি জানান বক্তারা।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুস সোবহান।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নিজ দলের নেতাকর্মীরা এমপি এনামুল হকের বিরুদ্ধে জেএমবি ও সর্বহারা ক্যাডারদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ উত্থাপন করেন।  

এ সময় তার বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের নানানভাবে হয়রানি-নির্যাতনসহ বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, এমপি এনামুল হকের মদদে বাগমারায় ঘাপটি মেরে থাকা জেএমবি ও সর্বহারা সদস্যরা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এমপির ছত্রছায়ায় তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে এমপি ব্যক্তিগত বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়, এমপি এনামুল হকে বাহিনীর নেতৃত্বে আছেন রাজশাহী শহরের চিহ্নিত শিবির ক্যাডার শাকিল ও জুয়েল। তাদের নেতৃত্বে বাগমারায় এমপির নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্ব পালন করছিলেন তালিকাভুক্ত চরমপন্থি ক্যাডার সাবেক যুবদল নেতা হাবিবুর রহমান বাশার, নব্য যুবলীগ নেতা আইনুল হক, মখলেছুর রহমান, জহুরুলসহ আরও কয়েকজন। এদের প্রত্যেকের কাছে অস্ত্র রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।  

গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাগমারা থানার এক এসআইকে পেটানোর ঘটনায় হাবিবুর রহমানসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে হাবিবুরের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে বাগমারা পুলিশ। এছাড়া জেএমবি ক্যাডার মামুন মুহুরী, আব্দুস সাত্তার, লুৎফরসহ কয়েকজন জেএমবি সদস্যকে এমপি এনামুল কারাগার থেকে মুক্ত করিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন সংবাদ সম্মেলনের বক্তারা।

মামলা দিয়ে বাগমারার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হয়রানি ও নির্যাতন, জেএমবি সদস্যদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আনা, নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তোলেন এমপির নিজ দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, এমপি এনামুলের জন্য স্থানীয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। শুধু তাই নয়, এলাকায় তার বাহিনীর দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিতরা বাগমারা থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে গেলেও কোনো প্রতিকার পান না। কারণ ওসি এমপির অনুগত হওয়ায় সন্ত্রাসী বাহিনীর কিছুই হয় না।  

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি এনামুল হককে মনোনয়ন না দেওয়ার দাবিও জানান নেতা-কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুস সোবহান ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বীরেন্দ্রনাথ সরকার, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, তাহেরপুর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ, বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউদ্দিন টিপু, মুক্তিযুদ্ধ বিষায়ক সম্পাদক কমান্ডার আসর আলী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সদস্য আবদুর সালাম, যোগীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান আলমগীর সরকারসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের পর এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কাছে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন এমপি এনামুল হক। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।  
তার সময়ে এলাকার উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন এমপি এনামুল।

পুলিশ পেটানো যুবলীগকর্মীর সঙ্গে এমপির ছবি!

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।