ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

ষোড়শ সংশোধনীর পুনর্বিবেচনা-পর্যবেক্ষণ বাতিলের দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
ষোড়শ সংশোধনীর পুনর্বিবেচনা-পর্যবেক্ষণ বাতিলের দাবি ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম/ছবি: সুমন

ঢাকা: ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে যে রায় দেওয়া হয়েছে তা পুনর্বিবেচনা এবং পর্যবেক্ষণ বাতিলের দাবি জানিয়েছে ১৪ দলীয় জোট।

রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে ১৪ দলের এক জরুরি সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সভা শেষে ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

তিনি বলেন, এই রায় এবং পর্যবেক্ষণ নিয়ে ১৪ দলের বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা সংক্ষুব্ধ, ১৪ দল সংক্ষুব্ধ।

তিনি আরও বলেন, অবশ্যই এই রায় পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং রায়ে যে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করতে হবে। তা না হলে জনগণ ক্ষমা করবে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, বৈধ সংসদ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে রায়ে যে পর্যবেক্ষণ রয়েছে তা ১৪ দল প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা ১৪ দল এই রায়ে সংক্ষুব্ধ। এই রায় পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি। রায়ের পর্যবেক্ষণগুলো বাতিল করতে হবে। আমরা এটা আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।
 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন সে সম্পর্কে দেশের মানুষ জানে। বঙ্গবন্ধু যে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তা চন্দ্র-সূর্যের মতোই সত্যি। এটা নিয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে যা বলা হয়েছে, তাতে বঙ্গবন্ধুকে ছোট করা হয়েছে। জনগণ তা মেনে নিবে না, ক্ষমা করবে না। আমরা মনে করি এ রায়ের পুনর্বিবেচনা জরুরি।

নাসিম বলেন, এই রায়ের পর বিএনপি যে সব বক্তব্য দিচ্ছে তাতে গণতন্ত্রকে অবমাননা করা হয়েছে। এই রায়কে কেন্দ্র করে তারা চক্রান্ত শুরু করেছে। আগামী নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে তারা চক্রান্ত করছে। অবশ্যই এই রায় পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ বাতিল করতে হবে। তা না হলে জনগণ ক্ষমা করবে না।
 
সংবাদ সম্মেলনে জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় হয়ে যাওয়ার পর তা জনগণের সম্পদ হয়ে যায়। সে সম্পদ নিয়ে আলোচনা সমালোচন হতে পারে। তা কোনোভাবেই আদালত অবমাননা নয়, অন্যায় নয়। যারা এটা বলেন, তারা বালকিল্য আচরণ করেন। এই রায়ের পর্যবেক্ষণ বিচার বর্হিভূত, অপ্রাসঙ্গিক, উদ্দেশ্যমূলক ও পক্ষ্যপাতমূলক। এটা আমরা আশা করি না। এতে মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ ও বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে খাটো করা হয়েছে। এ রায় নিয়ে যারা উল্লাস প্রকাশ করছেন তারা দেশের রাজনীতিকে কলুষিত করছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণের শক্তিকে ম্লান করার জন্যই এ রায় দেয়া হয়েছে। এই রায় গ্রহণযোগ্য নয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা এবং পর্যবেক্ষণ বাতিল করা উচিত।
 
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, প্রধান বিচারপতি বলেছেন এ রায় নিয়ে রাজনীতি করা অনুচিত। কিন্তু দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে যে কথা বলা হয়েছে সেটা প্রাযোজ্য ছিলো না। এটা নিয়ে কথা না বলে উপেক্ষা করে থাকা অনুচিত কি না। আমরা মনে করি এবং দৃঢ়ভাবে বলি আমাদের ইতিহাসের প্রকৃত ধারায় ফিরে আসতে হবে, রায়কে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, এই রায়ে জনগণের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। এই রায় প্রত্যাখ্যান করছি। সংবিধানে আছে সব কিছুর মালিক জনগণ, সুতরাং জনগণের প্রতিনিধিদের হাতেই ক্ষমতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক।  বলা যায়, এ রায় সংবিধান পরিপন্থি। এই রায় বিএনপিকে অপরাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। আর ইতিহাসের মীমাংশিত বিষয় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে এতে করে স্বাধীনতা বিরোধীদের উস্কানি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু অমীমাংসিত অবস্থানে নিতে চাইছে। যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না এই রায়ে তারা উৎসাহিত হয়েছে।  

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আমি জানি না মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রধান বিচারপতি কোথায় ছিলেন। আসলে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তিনি জানেন না বলেই দুঃসাহস দেখিয়েছেন। এই রায়ের পর্যবেক্ষণ অপ্রাসঙ্গিক। এটা প্রত্যাহার করা উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
এসকে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।