ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

পলায়নপর মনোবৃত্তি ছাড়ুন, খালেদাকে হাসিনা

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৭
পলায়নপর মনোবৃত্তি ছাড়ুন, খালেদাকে হাসিনা শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া

স্টকহোম, সুইডেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ব্যাংকে ঋণ খেলাপির কালচার থেকে শুরু করে যত রকমের দূর্নীতির পথ উন্মুক্ত করেছিলো মিলিটারি ডিকটেটর জিয়া, এরপর এরশাদ এবং জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়া।’

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) স্থানীয় সময় বিকেল ৭টায় স্টকহোম সিটি কনফারেন্স সেন্টারে প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
 
‘১৯৭৫’র ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া ও এরশাদ এবং পরবর্তীতে খালেদা জিয়া দেশে নির‌্যাতন, দূনীতি, মানি লন্ডারিং, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।


 
খালেদা জিয়ার সন্তানদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা যেমন ম্যাট্রিক ফেল, অবশ্য জিয়াউর রহমান ম্যাট্রিক পাশ, আর তার ছেলে কদ্দুর পাশ তা আর আমি বলতে চাই না। আপনারাই ভাল জানেন। কাজেই এই হল তাদের অবস্থা। ’
 
‘তারা অর্থ-সম্পদ লোপাট ওইগুলি শিখেছে, হাওয়া ভবন খুলে পাওয়া-নেওয়া বুঝেছে, কমিশন নেওয়া বুঝেছে, দুর্নীতি করা বুঝেছে। ’
 
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিচিত ছিলো দূর্নীতি, দুর্যোগের দেশ, ঘূর্ণিঝড়ের দেশ আর শুধু সাহায্য চাওয়ার দেশ। এটা কেন হয়েছিলো। যারা ক্ষমতায় এসেছিলো তারা বাংলাদেশের মর‌্যাদা বাড়ুক তা চায়নি। ’
সুইডেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে দেওয়া সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা 
‘বিদেশ থেকে যে সাহায্য আনবে ঐ গরিব মানুষকে দেখিয়ে তা লুটপাট করে নিজেরাই বড় লোক হবে। নিজেরাই বিত্তশালী হবে। এটাই ছিলো তাদের মূল লক্ষ্য। ’
 
অপরাধী না হলে তারেক জিয়া বিদেশ পড়ে থাকবে কেন? প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদার বড় ছেলে তারেকের মানিলন্ডারিং আমেরিকার ফেডারেল কোর্টে প্রমানিত। এফবিআইয়ের প্রতিনিধি বাংলাদেশের কোর্টে সাক্ষী দিয়ে গেছে। ’
 
‘মানিলন্ডারিংয়ের জন্য তারেক জিয়ার ৭ বছর কারাদন্ড হয়েছে। সাজাটা মাথায় নিয়েই বিদেশে আছে। আজকে যদি অপরাধী না হয় তাহলে বিদেশে পড়ে থাকবে কেন?’
 
খালেদা জিয়ার আদালতে মামলায় হাজিরা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, আরও একটা কেসে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় একশ ৪০ বার কোর্টে সে সময় নেয়। কোর্টে সে হাজিরা দেয় না। হাইকোর্ট এবং সুপ্রীম কোর্টে ৫০ বার রিট করে। প্রত্যেক রিটে হেরে যায়। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিটিং করে বেড়ান, সাজুগুজু করে দাওয়াতও খান। ওদিকে অসুস্থতার কথা বলে কোর্টে যেতে পারেন না!’
 
‘অর্থাৎ পলায়নপর মনোবৃত্তি। ’
 
দেশের মানুষ ভালো থাকলে খালেদা জিয়ার ভালো লাগে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘লুটপাট করতে পারলেই তার ভাল লাগবে। মানুষ খুন করতে পারলেই তাদের ভাল লাগবে। দেশের সম্পদ ধ্বংস করতে পারলে তখন তার ভাল লাগে। ’
 
‘বরং আমি আমি বলবো এইসব পথ ছেড়ে দিয়ে সঠিক, সুস্থ রাজনীতির পথে আসুক। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফেডারেল কোর্ট রায় দিয়েছে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। এটা যে বাস্তব, এরা সত্যিই সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে। ’
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড ছাড়া কিছুই বোঝে না, ধ্বংস করা ছাড়া যেন আর কোন কাজ তারা জানে না। তারা কি ভেবেছে- মানুষ সেকথা কথা ভুলে গেছে যে, কিভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার তারা করেছে?’
 
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের নিয়ে কমিটি করে দেয়া এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনমত গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
 
হুশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও ধরনের জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস বাংলাদেশে স্থান পাবে না।
 
তিনি বলেন, অভিযান চালানোর সময় যদি কোন জঙ্গি মারা যায় তাহলে তাদের জন্য সবথেকে বেশি মন খারাপ করে কে বলতে পারেন? তখন উপস্থিত প্রবাসীরা একসাথে বলে ওঠেন ‘খালেদা জিয়া’।
 
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন এবং দেখেছেন, তাদের জন্য তারা আকুল হয়ে যান এবং এসব অপপ্রচারগুলি তারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়ায়।
 
তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি যে একটা জঙ্গি-সন্ত্রাসী সংগঠন এই কথাগুলি তাদের জানাতে হবে।
 
সুইডেনের রাজা এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফলপ্রসু ও চমৎকার আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
 
অনুষ্ঠানে ইউরোপ ও সুইডেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি প্রবাসী বাঙালিরা উপস্থিত ছিলেন।

ইউনুস কেন লালায়িত ছিলো, মাজেজা বেরুচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬২২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৭
এমইউএম/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।