ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

সরব হচ্ছে ঘরকুনো বিএনপি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
সরব হচ্ছে ঘরকুনো বিএনপি!

ঢাকা: কয়েক মাস আগেও মধ্যম সারির নেতারা রাজনীতির মাঠে ছিলেন না। শীর্ষ নেতাদের দু’একজন সভা-সেমিনারে অংশ নিলেও স্বল্প সময়ে কেটে পড়তেন। সে সব কর্মসূচিতে অচেনা মুখের আনাগোণাই ছিল বেশি। অনেক ক্ষেত্রে ‘ভাড়া করা দলীয় নেতা-কর্মীর’ সমাগম ছিল। ছিল না তৃণমূল কর্মীদের অংশগ্রহণ।

সেই ‘ঘরকুনো’ বিএনপি এখন সরব হতে শুরু করেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মধ্যম সারির নেতারাও সক্রিয়, রাজনীতির মাঠে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি পেশাজীবীদেরও সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়ছে।

 
 
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০ ঘোষণার পর সেটাকে আগামী নির্বাচনী ইশতেহার মনে করেই সামনে এগুচ্ছে বিএনপি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে শীর্ষ নেতাদের দিয়ে বাকি নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং শক্তি বাড়ানো শুরু করেছে এক সময়ে ক্ষমতাসীন থাকা এই দলটি।
 
বিএনপি চেয়ারপারসনের দলীয় কার্যালয় তল্লাশির দিনও বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবীদের একটি সংগঠনের ব্যানারে একটি সেমিনারে কয়েকজন শীর্ষ নেতা অংশ নেন। শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং আয়োজকদের বক্তব্যে স্পষ্টত আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির আভাসই পাওয়া গেছে।  
 
শনিবার রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা সেমিনার ও গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল অংশ নেন।  
 
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট জিয়ার নীতি ও কর্মসূচি’ শীর্ষক অনুষ্ঠান আয়োজন করে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি টিচার্স (অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্স)’।
 
সভা শুরুর খানিক পরেই অনুষ্ঠানস্থলে আসেন ব্যারিস্টার মওদুদ। এরপর বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ এবং এ বিষয়ের বিএনপি সমর্থিত প্রায় এক ডজনের বেশি শিক্ষক নেতা। অংশ নেন আরও এক ডজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।
 
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে আসেন রুহুল কবির রিজভী। তার বক্তব্যের আগ মুহূর্তে হঠা‍ৎ করেই চলে আসেন হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। সঙ্গে তার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ ১০/১২ জনের দল। অথচ ব্যানারেও নাম ছিল না সোহেলের। সোহেলসহ তাদের আসারই কথা ছিল না বলে জানায় আয়োজকরা।
 
অথচ কিছু দিন আগেও বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে দলীয় শীর্ষ নেতাদের নাম থাকলেও তারা আসতেন না, বা এলেও কেটে পড়তেন দ্রুত।
 
শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদের বক্তব্যে ছিল উজ্জীবিত করার মন্ত্র। এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের প্রাণ রিজভী আহমেদ। আর দীর্ঘ দিন জেলে থাকা সোহেলের নেতৃত্বে আবারও উজ্জীবিত হবে বিএনপি। এসময় হল ভর্তি শিক্ষক নেতা এবং নেতা-কর্মীরা হাত তালি দেন।
 
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এসএম গোলাম হাফিজ কেনেডী সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন। মূলত কৃষি ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমানের ভূমিকাগুলোই সেমিনারে আলোচনা করেন বিএনপি নেতা এবং শিক্ষক-পেশাজীবীরা।
 
অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি টিচার্সের সভাপতি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইদ্রিস মিয়া সভাপতিত্ব করেন।  
 
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, শুধু ঢাকায় বসে থেকে আলোচনা করলে হবে না। সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। সাধারণ মানুষের ভোট পেতে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের দুর্বলতাগুলো প্রচার করতে হবে।

বেলা একটার দিকে আলোচনা শেষে ডিআরইউ এলাকায় দেখা যায়, আরও প্রায় ৫০-৬০ জন বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। শীর্ষ নেতার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকেও দেখা যায় ডিআরইউ এলাকায়।  
 
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক শাহ মো. ফারুক, অধ্যাপক ফারুক হাসান, অধ্যাপক সিরাজুল করীম, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক নুরুল আলম, অধ্যাপক এম এ কুদ্দুস, অধ্যাপক সহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল লতিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
এমআএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad