ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

দলে ‘আবর্জনা’ ঠাঁই না দিতে শেখ হাসিনার নির্দেশ

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩১ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
দলে ‘আবর্জনা’ ঠাঁই না দিতে শেখ হাসিনার নির্দেশ আওয়ামী লীগের ‘ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র’ হাতে বক্তব্য রাখছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: অনুপ্রবেশকারীদের দলের আবর্জনা হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের দলে ঠাঁই না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে যারা দলে অনুপ্রবেশ ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

শনিবার (২০ মে) গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় নেতা-কর্মীদের শেখ হাসিনা এ নির্দেশনা দেন। সভায় উপস্থিত কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপে এ তথ্য জানা গেছে।

সকাল ১০টায় গণভবন প্রাঙ্গণে শুরু হয় ক্ষমতাসীন দলটির এ বিশেষ বর্ধিত সভা। গত বছর ২০তম সম্মেলনের পর এটিই প্রথম আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা। সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যসহ জেলা ও মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভার উদ্বোধনী বক্তব্যের পর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার মতবিনিময় করেন শেখ হাসিনা।

সূত্র জানায়, মতবিনিময়ে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ, গ্রুপিং, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের দূরুত্ব, দলের কিছু শীর্ষ নেতার বক্তব্যের নেতিবাচক প্রভাব, সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয়হীনতাসহ নানা অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন তৃণমূল নেতারা।  

আরও পড়ুন
‘নৌকা জনগণের মার্কা’
তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য ও অভিযোগ শোনার পর আবারও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে দলের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন।

জরিফ চালানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বহু জায়গায় যারা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন করেছে, নানা অপরাধ করেছে, তাদের দলে নেওয়া হয়েছে। গ্রুপিং ভারি করার জন্য অনেকে তাদের দলে নিয়েছেন।  

অনুপ্রবেশকারীরা দলে এসেছে কেন? প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে যারা জ্বালাও-পোড়াও করেছে, তাদের অনেকে দলে এসেছে। অনেকে দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, অনেকে দলে যোগদান করে আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে।  

আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, গ্রুপিংয়ের স্বার্থে, দল ভারী করার স্বার্থে এ সমস্ত আবর্জনা দলে স্থান দেওয়া যাবে না।

ক্ষতিকর এসব অনুপ্রবেশকারীদের দলে ভেড়ানো নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যদি এ পথ না ছাড়েন, তবে নেতৃত্ব থাকবে না।  

এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা তুমুল করতালির মাধ্যমে শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানান।

মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলে সবাইকে মিলে-মিশে কাজ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তৃণমূলে দলের মনোনয়ন নিয়ে জালিয়াতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা এ বিষয়ে সবাইকে সর্তক করেন। আগামীতে সংশ্লিষ্ট সবার স্বাক্ষরসহ তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে সিদ্ধান্ত পাঠানোর কথা বলেন তিনি।

আগামীতে নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে তার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরুর কথা উল্লেখ করে তিনি এ অভিযানকে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন নেতা-কর্মীদের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেলার নেতারা উপজেলায়, উপজেলার নেতারা ইউনিয়নে এবং ইউনিয়নের নেতারা ওর্য়াডে যাবেন। এভাবে সদস্য সংগ্রহ করবেন।

আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের উন্নয়ন, বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময়কার সহিংসতা, অন্যান্য সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের তূলনামূলক চিত্র তুলে ধরতেও নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা দেন, প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নে নিজস্ব অফিস থাকতে হবে।

সভায় প্রতিটি জেলাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার (সজীব ওয়াজেদ জয়) সৌজন্যে একটি করে ল্যাপটপ দেওয়া হয়। এসব ল্যাপটপকে ডাটাবেজ ও যোগাযোগের জন্য যথাযথ ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়।  

এসময় সবার সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭/আপডেট ১৯১১ ঘণ্টা
এমইউএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।