ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

হেফাজত-জামায়াত নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিএনপি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
হেফাজত-জামায়াত নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিএনপি হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলাম ও বিএনপির দলীয় প্রতীক

ঢাকা: একদিকে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সরকারের সঙ্গে সখ্যতা, অন্যদিকে জামায়াতের সঙ্গে নিজেদের দূরত্ব নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে।  তবে অনলাইন ভিত্তিক কর্মসূচিতে জামায়াত সক্রিয় থাকলেও তাদের প্রকাশ্যে কোন কর্মসূচি নেই।

 মানবতা বিরোধী অপরাধে দলটির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি এবং সরকারের অব্যাহত দমন পীড়নের কারণে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অবস্থাও শোচনীয় পর্যায়ে।   জামায়াত বিএনপির জোটে থাকলেও আগের মত জোটবদ্ধ কর্মসূচিতে নেই।  আবার জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে বিএনপির ওপর দেশি-বিদেশি চাপও রয়েছে। এছাড়া হেফাজতে ইসলাম তাদের কর্মসূচিতে একসময় বিএনপির সমর্থন পেলেও ইদানীংকালে সরকারের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিএনপিকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে।  

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতসহ ইসলামী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর বর্তমান অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে, ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কে কার্যত ভাটা পড়েছে কিনা? 

জামায়াত- হেফাজত সম্পর্ক নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।  

জামায়াত- হেফাজতের সঙ্গে বিএনপির বর্তমান সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, হেফাজতে ইসলামীর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি আমার কাছে স্পষ্ট নয়।  তারা বিগত দিনে সাংঘাতিকভাবেসরকারের অনেক ব্যাপারে এবং গণতান্ত্রিক যে কোন বিষয়ে মতামত দিতো। এমনকি জনমত তৈরি করতো।  বর্তমানে হেফাজত সে অবস্থান থেকে কেন পরিবর্তিত হলো?  সে সম্পর্কে বিশদ জানা নাই।  তবে এটা তাদের পলিসিগত বিষয় হতে পারে।  

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন খান মোহন বাংলানিউজকে জানান,হেফাজতে ইসলাম মূলত রাজনৈতিক দল নয়।  একমাত্র আল্লামা শফী ছাড়া এদের কোন ভিত্তি নেই।  ভোটের রাজনীতিতে হেফাজতে ইসলাম কতটা প্রভাব ফেলবে সেটা পরে বিবেচ্য হলেও হেফাজতকে নিয়ে সাময়িকভাবে সরকার যে সফল হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।   কিন্তু হেফাজতের মত একটি শিকড়বিহীন প্লাটফর্মের উপর নির্ভর করা বিএনপির রাজনৈতিক ভুল ছিল।  যার খেসারত বর্তমানে দিতে হচ্ছে এবং সামনের দিনগুলোতেও দিতে হবে।  

জামায়ত- হেফাজতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক প্রসঙ্গে ডা. জাফরুউল্লাহ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন,  বিএনপিকে বুঝতে হবে জনগণের কথা।  বিএনপির দাবি হওয়া উচিত দেশের শাসনব্যবস্থা ও দেশের মানুষের সমান সুযোগ সুবিধা আদায়ের।  ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার।  তাই ধর্মীয় কোন গোষ্ঠীকে মূল্যায়ন না করে দেশের কৃষক, শ্রমিক, আম জনতাকে নিয়ে পথ চলতে হবে।  বিএনপির বলা উচিত আমরা হিন্দুস্তান বা আরবিস্তান চাই না।  আমরা এমন একটা সেক্যুলার বা অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়বো, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ মিলে মিশে বসবাস করবে।  

সরকারের বর্তমান হেফাজত প্রীতি নিয়ে বিএনপিপন্থি এই বুদ্ধিজীবী বলেন, হেফাজতেইসলামকে নিয়ে বিএনপির উদাসীনতাকে কাজে লাগিয়ে সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে।  সরকার ভারত বিজয়ে ব্যর্থতাকে ঢাকতে হেফাজত বিজয় করেছে।  সেক্ষেত্রে সরকার সফল হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।