ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

খালেদা চুপ কেন, প্রশ্ন আ’লীগ নেতাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
খালেদা চুপ কেন, প্রশ্ন আ’লীগ নেতাদের সভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: জাতীয় গণহত্যা দিবসে বিএনপি ও দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিশ্চুপ কেন তা জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা জাতীয় গণহত্যা দিবস বিষয়ে বিএনপি অবস্থান পরিষ্কার করারও আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর বাঙলা কলেজে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় গণহত্যা দিবসের কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে আশাবাদ করেন।

জাতীয় গণহত্যা দিবসে ঢাকা মহানগর উত্তরের এ জনসভায় বিপুল নেতা-কর্মী জড়ো হন। দুপুরের পর থেকে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আসতে থাকেন। পুরো মাঠ কানায় পূর্ণ হওয়ার পর রাস্তায় শত শত নেতা-কর্মীকে দাড়িয়েঁ থাকতে দেখা যায়।

বিশ্বের বিভিন্ন গণহত্যার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, একাত্তরের গণহত্যা যেকোনো গণহত্যার চেয়ে ভয়াবহ ছিলো।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে বিএনপি-খালেদা জিয়া রহস্যজনকভাবে নীরব কেন- প্রশ্ন রেখে বলেন ওবায়দুল কাদের বলেন, এই গণহত্যা দিবস সম্পর্কে বিএনপি- খালেদা জিয়ার পরিষ্কার অবস্থান জানতে চাই। তারা কি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না বিপক্ষে স্পষ্ট করুক।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শপথ নিতে হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করবো।  

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, অপারেশন সার্চ লাইট নামে ২৫ মার্চ তারা গণহত্যা শুরু করে। দীর্ঘ নয় মাস তারা গণহত্যা চালিয়েছে।

গণহত্যার বিষয়ে বিএনপির কাছে জবাব চাওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে আমু বলেন, খালেদা জিয়া জামায়াত নেতা নিজামী-মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়ে, তাদের সঙ্গে জোট করে তার জবাব দিয়ে দিয়েছেন, তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে, শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে জবাব দিয়েছেন তারা কোনো পক্ষের। সভা মঞ্চে অতিথিরা।  ছবি: জিএম মুজিবুরবিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমু বলেন, একাত্তরের গণহত্যা সেদিন সারা বিশ্বের বিবেককে নাড়া দিয়েছিলো। বিশ্ব বলেছিলো ‘স্টপ জেনোসাইড’। আজ আবার বিশ্বনেতাদের সেই সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে এ দিবসের আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি চাই।

একাত্তরের গণহত্যা এবং পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বর্বরতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, তাদের নীতি ছিলো মানুষ চাই না। মাটি চাই।

খালেদা জিয়া কীভাবে একাত্তরের গণহত্যায় শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তা জানতে চান মতিয়া চৌধুরী।  

গণহত্যা দিবসে বিএনপি নিশ্চুপ কেন? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বিএনপি, খালেদা জিয়া, বিএনপি মহাসচিব জবাব চাই।

খালেদা জিয়া ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মেয়েজামাই ডেভিড বার্গম্যানসহ যারা একাত্তরের শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, সবার প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, এদের ঘৃণা করি।

পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগীদের বিচারের পাশাপাশি তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিতরণ করার দাবি করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি এজেন্ট হিসেবে ছিলেন। এজন্য পরবর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যায় তিনি অন্যতম নায়ক ছিলেন।

নানক বলেন, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো কটাক্ষ করলে বাংলার মানুষ তার দাঁত ভাঙা জবাব দেবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য আখতারুজ্জামান, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, আসলামুল হক, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।