ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

অরফানেজেও খালেদাসহ আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ২৬ জানুয়ারি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
অরফানেজেও খালেদাসহ আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ২৬ জানুয়ারি

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ জামিনে থাকা চার আসামির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন আগামী ২৬ জানুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
 

ওইদিন খালেদা ছাড়াও জামিনে থাকা অন্য তিন আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদকে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে ছয় আসামির অন্য দু’জন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন না।

অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থন ফের পিছিয়ে আগামী ২৬ জানুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার ৩২তম ও শেষ সাক্ষী মামলাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক নূর আহমেদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামিপক্ষের জেরা শেষ হয়। এরপর আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য করেন রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদ্দারের অস্থায়ী আদালত।  

এর আগে খালেদা জিয়ার আবেদনে পঞ্চমবারের মতো অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে নতুন দিন ধার্য করেন।  

আদালতটিতে চলছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম।

দু’টি মামলায় হাজিরা দিতে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে রওনা হয়ে বেলা ১১টায় আদালতে পৌঁছেন খালেদা জিয়া। বেলা ১টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে গেলেও আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।
 
এরপর খালেদার উপস্থিতিতে দুদক থেকে অবসরপ্রাপ্ত নূর আহমেদ ৩২তম ও শেষ সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন অরফানেজ মামলায়। পরে আসামিদেরপক্ষে তাকে জেরা শেষ করেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান, সানাউল্লাহ মিয়া, বোরহান উদ্দিন, মিজানুর রহমান, শরফুদ্দিন আহমেদ ও মুনিরুল হুদা।

দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।

এর আগে এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আরও ৩১ জন সাক্ষী। গত ০৫ জানুয়ারি নূর আহমেদের সাক্ষ্যগ্রহণে খালেদার আইনজীবীদের আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

চ্যারিটেবল মামলায় ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে গত বছরের ০১ ডিসেম্বর লিখিত বক্তব্য পড়তে শুরু করেন খালেদা। বৃহস্পতিবার অসমাপ্ত বক্তব্য পাঠের দিন ধার্য ছিল। তবে তার আইনজীবীরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে করা আবেদন শুনানির অপেক্ষায় থাকার কথা উল্লেখ করে সময়ের আবেদন জানান। দুই সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী ২৬ জানুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করেন আদালত। এর আগেও আরও চারবার আবেদন জানিয়ে দিন পিছিয়ে নিয়েছেন খালেদা।

চ্যারিটেবল মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান।

চ্যারিটেবল মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন।

জামিনে থাকা দুই মামলার আসামিরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমানের পক্ষে হাজিরা দেন তার আইনজীবী।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।