ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘রায় হাতে এলে টু দ্য পয়েন্ট কথা’ বলবে বিএনপি

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট/আসাদ জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১১
‘রায় হাতে এলে টু দ্য পয়েন্ট কথা’ বলবে বিএনপি

ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনীত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর মধ্য দিয়ে দেশে সাধারণ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না করার নির্দেশ দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।



আদালতের এই রায় সম্পর্কে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় প্রধান বিরোধীদল বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতার কাছে।

সুপ্রিম কোর্টের রায় সম্পর্কে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানাতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, ‘কেবল হেড লাইন দেখে এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া ঠিক হবে না। পুরো রায়টা হাতে না আসা পর্যন্ত কিছু বলতে পারব না। রায় হাতে পাওয়ার পর আমরা টু দ্য পয়েন্ট কথা বলব। ’

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনও হঁাঁটলেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দেখানো পথে।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আজ সন্ধ্যায় হয়তো ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) কথা বলবেন। এ মূহুর্তে আমি কিছু বলতে পারছি না। দলীয়ভাবেই এ ব্যাপারে কথা বলা হবে। ’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, ‘আপিল বিভাগ এ রায় দিয়ে একটা জগাখিঁচুড়ি অবস্থার সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। ’

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি রাজনীতি, জনগণ ও সংসদের বিষয়। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি জনগণের দাবিতেই সংসদে পাশ হয়েছিল। কিন্তু জনগণের এমন কোনো দাবি ওঠেনি যে এই মূহুর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। ’

এ বিষয়ে দলের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমারা দলীয়ভাবে আলোচনা করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাব। ’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এই মূহুর্তে এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমাদের ভাবতে সময় দেন। পরে আপনাদের বিস্তারিত জানাব। ’

অপর বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তার প্রতিক্রয়ায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘কোর্টের এখতিয়ার আছে যে কোনো বিষয়ে রায় দেওয়ার। কোর্ট এ এখতিয়ার সংবিধানের কাছ থেকেই পেয়ে থাকে। তবে সংবিধানের কোনো মৌলিক বিধান বাতিলের এখতিয়ার সংবিধান কোর্টকে দেয়নি। ’

কোর্টের এ রায়কে সুপারিশ হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মনে করেন ব্যারিস্টার হুদা।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের মৌলিক কোনো পরিবর্তন করতে হলে গণভোটের কোনো বিকল্প নেই। তবে কোর্টের এ রায়কে সরকার বা সংসদ সুপারিশ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। এ সুপারিশ সংসদে বিল আকারে উত্থাপন করে সংবিধান সংশোধনে কাজে লাগাতে পারে। ’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সংবিধান সংশোধন নিয়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা সমাধানের জন্য বিচার বিভাগের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লে ফল ভালো হবে না। এই পরিস্থিতিতে কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলি গঠনের কোনো বিকল্প নেই। ’

কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলি গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সংসদ নেতা, বিরোধী দলের নেতা, সরকারি দলের চিফ হুইপ, বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও স্পিকারকে নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করতে হবে। এ কমিটি ৭ দিনের মধ্যে একটি তত্ত্ববধায়ক সরকার গঠন করবে। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করবে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটের মাধ্যমে কনস্টিটিউশন অ্যাসেম্বলি গঠিত হবে। এই অ্যাসেম্বলির কাজ হবে সংবিধান সংশোধন অথবা নতুন সংবিধান প্রণয়ন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।