ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

শেয়ারবাজার কেলেংকারির তদন্ত রিপোর্ট প্রশ্নবিদ্ধ ও হতাশাব্যাঞ্জক: বিএনপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১১
শেয়ারবাজার কেলেংকারির তদন্ত রিপোর্ট প্রশ্নবিদ্ধ ও হতাশাব্যাঞ্জক: বিএনপি

ঢাকা: সদ্য প্রকাশিত শেয়ার বাজার কেলেংকারি ঘটনায় তদন্ত রিপোর্ট প্রশ্নবিদ্ধ ও হতাশাব্যাঞ্জক উল্লেখ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে অবিবেচনা প্রসূত এবং ভ্রান্তনীতি, অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার জন্য অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের অপসারণসহ ৫দফা দাবি উত্থাপন করেছে দলটি।



বুধবার দুপুর ১২ টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এ বক্তব্য তুলে ধরেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ড. ওসমান ফারুক।

লিখিত বক্তৃতায় আমির খসরু বলেন, গঠিত তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তা পূর্ণাঙ্গ আকারে জনগণের সামনে প্রকাশ, যে সব চিহ্নিত লুটেরা ১৯৯৬ ও বর্তমান সঙ্কটে লাখ লাখ বিনিয়োগকারীকে সর্বশান্ত করেছে তাদের অবিলম্বে বিচারের ব্যবস্থা করা, সরকারি বেসরকারি আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের যে সব কর্মচারী পুঁজিবাজার কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে অচিরেই তাদের পদত্যাগ বা বরখাস্তের ব্যবস্থা নেওয়া হউক।

তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি যেই হোক, তিনি যদি বিএনপিরও হয় আমরা তারও শাস্তি দাবি করছি।

আমির খসরু বলেন, আমরা শুরু থেকেই পুঁজিবাজারকে রক্ষা করার জন্য পেশাজীবীদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু একতরফা তদন্ত কমিটি করে গত ৩১ মার্চ অর্থমন্ত্রীর কাছে যে প্রতিদেবন উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে প্রতিবেদনটি বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। এই প্রতিবেদনে মূল খলনায়কদের চিহ্নিতকরণ ও শাস্তির বিধানের বিষয়টি সুকৌশলে এড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সবকিছু মিলিয়ে এটা একটা গতানুগতিক তদন্ত প্রতিবেদন। জাতির প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। প্রতিবেদনটিতে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এসইসির ওপরই সকল অপকর্মের দায় দায়িত্ব চাপানোর প্রচেষ্টা করা হয়েছে। স্পষ্টত যারা বড় বড় রাঘববোয়াল পুঁজিবাজারকে গ্রাস করেছে তাদের জবাবদিহীতা বিচার ও শাস্তির আওতামুক্ত রাখার অপপ্রয়াস করা হয়েছে।

আমির খসরু বলেন, সবার কাছে দিবালোকের মতো পরিস্কার যে অর্থমন্ত্রণালয় এবং সার্বিকভাবে বর্তমান আওয়ামী সরকার শেয়ার বাজার সুরক্ষা করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি অর্থমন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপে একজন মন্ত্রীর পারিবারিক দুটি প্রতিষ্ঠানকে এসইসি সরাসরি তালিকাভুক্ত করে। যদিও স্টক এক্সচেঞ্জগুলি বেসরকারি খাতের কোনো কোম্পানিকে সরাসরি তালিকাভুক্তির না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাংকিং খাত থেকে বিভিন্নভাবে মোটা অংকের টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ফলে শেয়ার বাজারের বিপর্যয়কে আরো ঘনিভূত করেছে। দেশে যখন কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না তখন বর্ধিত মুদ্রা সরবরাহের একটি বড় অংশ শেয়ার বাজারের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়।

প্রতিবেদনটি নিয়ে সরকার ও অর্থমন্ত্রণালয় লুকোচুরি খেলছে উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, তাতে ৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে অবহেলা ও তাদের সঙ্গে রসিকতা করা হয়েছে।

রিপোর্ট নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে অর্থমন্ত্রী বলেছেন প্রতিবেদনে যাদের নাম রয়েছে তাদের নাম প্রকাশ করলে তাদের চরিত্র হনন করা হবে। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী যারা পথে বসেছে তাদের চেয়ে লুটপাটকারীদের সম্মান অর্থমন্ত্রীর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।