ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অর্থ নিজ অ্যাকাউন্টে রাখার ব্যাপারে তথ্য দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সিঙ্গারপুরে একজনের অর্থদ- হয়েছে।
দেশটির আদালত কোকোর সহযোগী লিম সিউ চেং নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রমাণিত দুটি অপরাধে মোট ১২ হাজার ডলার জরিমানা ধার্য করেন।
সিঙ্গাপুরের আদালত জানান, লিমের উচিৎ ছিল এ অর্থ যে অপরাধমূলক তৎপরতায় ব্যবহার হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে সন্দেহ করা এবং এ নিয়ে সিঙ্গাপুরের দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্ত ব্যুরোকে জানানো। তিনি এর কোনোটাই করেননি। তিনি তার দোষ স্বীকার করেছেন।
দুর্নীতি তদন্তকারী কর্তৃপকে না জানানোর অপরাধে সিঙ্গাপুরের আদালত দেশটিতে কোকোর এক সহযোগীকে অর্থদ- দিয়েছেন। সোমবার এ রায় দেওয়া হয়।
সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, কোকোর সহযোগী লিম সিউ চেং (৬৩)-এর বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মামলার তদন্তে দেখা গেছে, ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে আরাফাত রহমান কোকো জাস ট্রেডিং অ্যান্ড কনসালটিং নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেন। ইউনাইটেড ওভারসিস ব্যাংকে (ইউওবি) জাস ট্রেডিংয়ের নামে খোলা অ্যাকাউন্ট পরিচালনাকারী ছিলেন কোকো ও লিম। কিছুদিন পর কোকো সিঙ্গাপুরে ফেয়ারহিল কনসালটিং নামের দ্বিতীয় কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।
ইউনাইটেড ওভারসিস ব্যাংকে এ কোম্পানির নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালিত হয়েছে লিমে স্বারে। ২০০৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমস্যার অজুহাত দেখিয়ে কোকো লিমকে ওই কোম্পানি দুটি দ্রুত বন্ধ করে দিতে বলেন।
সে সময় কোকো ফেয়ারহিলের অ্যাকাউন্টে থাকা ৯ লাখ ৬৭৭ মার্কিন ডলার ও জাসের অ্যাকাউন্টে থাকা ২০ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৭ সিঙ্গাপুর ডলার লিমের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে বলেছিলেন। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সিঙ্গাপুর সরকার কোকোর দুটি অ্যাকাউন্টই জব্দ করে রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর আদালত কোকোর বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সরকারের নির্বাহী আদেশে কোকো দুই বছর আগে প্যারোলে ব্যাংককে যান। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে সরকার তাঁর প্যারোল বাতিল করে। এরপর কোকোর আবেদনে হাইকোর্ট বিভাগ তাঁর প্যারোলের মেয়াদ ২০ দিন বাড়িয়ে দেন। কিন্তু গত ১৩ অক্টোবর সরকারপরে আবেদনে আপিল বিভাগ ছয় সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। এর ফলে কোকো আর প্যারোলে নেই বিধায় অর্থ পাচারের মামলায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ২০০৮ সালের ১৭ মার্চ দুদকের সহকারী পরিচালক আবু সাইদ কাফরুল থানায় কোকো ও সাইমনের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের অভিযোগে মামলাটি করেন। দুদক মামলাটি তদন্ত করে গত বছর ১২ নভেম্বর কোকো ও সাইমনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সিঙ্গাপুরে ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৮ টাকা পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১১