ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

জিজ্ঞাসাবাদে অসুস্থ হয়ে পড়েন নিজামী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১০
জিজ্ঞাসাবাদে অসুস্থ হয়ে পড়েন নিজামী

ঢাকা: উচ্চ রক্তচাপের কারণে বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামী। রোববার রাত ৮টায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, মাত্র ৩ ঘণ্টার মধ্যে নিজামী দু’বার অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ কারণে দু’ দফায় অন্তত আধা ঘণ্টা করে জিজ্ঞাসাবাদ বন্ধ রাখতে হয়।

পল্টন থানার ৩৭ নম্বর মামলায় জামায়াতে ইসলামীর মুজাহিদ-সাঈদীর জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলেও রোববার রাত থেকে একই মামলায় দলটির আমীর মতিউর রহমান নিজামীর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) জিল্লুর রহমান জানান, বারবার অসুস্থ হওয়ায় রাত ১১ টায় জিজ্ঞাসাবাদে বিরতি দিয়ে নিজামীকে ডিবি (দক্ষিণ) বিভাগের হাজতে রাখা হয়েছে। এ মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া ৩দিনের মধ্যে প্রথম দিন অতিবাহিত হলো এভাবেই।

অন্যদিকে মুজাহিদ-সাঈদীকে পল্টন থানারই অপর মামলায় (নং-২০ তাং-১২-০২-২০১০ ইং) রাত ১০ টার পর থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুল ইসলাম, ডিবি পুলিশের ১জন সহকারী কমিশনার (এসি) ও দু’জন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) জিজ্ঞাসাবাদ দলে রয়েছেন।


মামলাটির ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা রোববার রাতে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি কে জানান, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আসামিদের নির্দেশে জামায়াত-শিবিরের কতিপয় নেতা-কর্মী পল্টন মোড়ের অদূরে রাষ্ট্রপতির গাড়িবহর আটকে দিয়ে রাস্তায় ব্যাপক গাড়ি ভাংচুর চালায়। বাধা দেওয়ায় তারা পুলিশ সদস্যদের ওপরেও হামলা চালায়। এতে ১৫/১৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।

ওইসময় জামায়াত-শিবির সারাদেশে অরাজকতা সৃষ্টির যে পাঁয়তারা চালায় এর জন্য জামায়াতের এ তিন শীর্ষ নেতাকে দায়ী মনে করছে পুলিশ। রোববার রাতের জিজ্ঞাসাবাদে মুজাহিদ-সাঈদীর সম্পৃক্ততা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রথম দফার দু’ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে মুজাহিদ ও সাঈদী বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমান্ডের নির্দেশ ছাড়া মাঠ পর্যায়ে মিছিল, বিক্ষোভ বা ভাংচুরের মতো কোনো ঘটনা ঘটে না।

জেএমবি-হুজিকে অর্থ দেয় জামায়াত:মুজাহিদ-সাঈদী
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুজাহিদ বলেন, ‘দেশে নাশকতা সৃষ্টির জন্য জামায়াতকে কোমরে গামছা বেঁধে মাঠে নামতে হয় না। এমনিতেই অনেকগুলো জঙ্গি সংগঠন দেশের নানা স্থানে মজবুত ঘাঁটি গেড়ে আছে। ’ এ পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘাঁটিগুলোর অবস্থান ও সেগুলোর সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক কি তার বিবরণ জানতে চান। এরপর থেকেই মুজাহিদ বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ হয়ে যান বলে সূত্রটি দাবি করে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সাঈদী ও মুজাহিদ জানান, জঙ্গি গ্রুপ হিসেবে নয়-ইসলামী দল হিসেবে জেএমবি, হুজি, হিযবুত তাহরির, হারমাইনসহ কয়েকটি গ্রুপকে জামায়াত প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা দেয়।

রোববার রাতে ডিবি (দক্ষিণ) বিভাগের দোতলায় একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারের কক্ষে সাঈদী ও মুজাহিদকে পাশাপাশি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাত ১০ টার পরপরই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে চালানো হয় রাত সোয়া ১২ টা পর্যন্ত।
পরে মুজাহিদকে ডিবি (উত্তর) বিভাগের হাজতখানায় এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে রমনা থানার মহিলা হাজতখানায় রাখা হয় বলে ডিবি সূত্রে জানা গেছে।

রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিবলী নোমান এর সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি-কে জানান, থানার মহিলা হাজতখানায় রোববার রাতে কোনো আসামি না থাকায় সেখানে সাঈদীকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২০ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।