নোয়াখালী থেকে : গত ২৩ বছরে নোয়াখালীতে যা হয়নি, এখন তা ইনশাআল্লাহ হবে। জেলা এখন প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হয়েছে।
নোয়াখালীকে প্রথম শ্রেণীর জেলায় উন্নীত করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ায় জেলাবাসীর দেওয়া সংবর্ধনার জবাবে সদর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।
শনিবার জেলা সদর মাইজদি কোর্টে শহীদ মিনারের পাশের বিজয়মঞ্চে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্য খায়রুল আনম সেলিমের সভাপতিত্বে এতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তৃতা করেন। তবে পৌর মেয়র ও বিএনপি’র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ আজাদ সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক হলেও অনুষ্ঠানে আসেননি।
সংবর্ধনার জবাবে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘জেলার সড়ক যোগাযোগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমার ইচ্ছার কোনো অভাব নেই। আমাদের নেতা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের আমাকে যথেষ্ট স্নেহ করেন। আমার প্রতি তার সহযোগিতার হাত সবসময় প্রসারিত। জেলার উন্নয়নে মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রণালয়ে দৌড়াতে আমার কোনো কষ্ট হবে না। ’
জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি সোনাপুর-জোড়ালগঞ্জ সড়ক ও নোয়াপাড়া-লক্ষ্মীপুর সড়ক নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপোয় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে কোনো সময় এ কাজ বাস্তবায়িত হবে। ’
এছাড়া সোনাপুর থেকে হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাট পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টিও এ সরকারের আমলেই বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি সুবর্ণচরকে পৌরসভা, হাতিয়াকে দু’টি উপজেলায় ভাগ করে দেওয়ারও প্রতিশ্র“তি দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘হাউজিং প্রকল্পের কাজ পর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে আরও অনেককে আবাসন সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এছাড়া চান্দিনা ভিটা প্রকৃত ব্যবসায়ীদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
জেলার প্রিয় নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা নিঝুম দ্বীপে পাওয়া খনিজ সিলিকনকে সংরণ করা হবে। এ খনিজ পদার্থ উত্তোলনের মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। ’
এজন্য প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘জেলায় তেলকূপের সন্ধান পেলে সেখান থেকে তেল উত্তোলনে প্রয়োজনীয় পদপে নেওয়া হবে। ’
তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘খারাপ কাজ, সন্ত্রাসী, মাস্তানি, মাদকসেবন এবং মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতে দেওয়া হবে না। ’
এ সময় তিনি উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছ থেকে স্লোগানে স্লোগানে এ ধরনের প্রতিশ্র“তি আদায় করেন। কর্মীরাও তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে নিজেদের সততা প্রতিষ্ঠার শপথ করেন।
একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালী জেলাকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ ল্েয কঠোর পরিশ্রম করায় সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমানের কথাও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি চরাঞ্চলে মোটরসাইকেলে চড়ে বেড়াই। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের দুঃখ-বেদনার কথা শুনি। তখন তারা আমাকে প্রশ্ন করেন, আপনার মৃত্যুর ভয় নাই? আমি তাদের বলেছি বীরেরা একবারই মরে, তাদের মরণের কোনো ভয় থাকে না, আমি মৃত্যুকে পরোয়া করি না। ’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক মো. সিরাজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার হারুন-উর রশিদ হাযারি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বেলাল উদ্দীন কিরণ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, হাতিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক ওয়ালিউল্লাহ, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন আজাদ, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময় : ১৯৪১ ঘণ্টা, ৩০ অক্টোবর, ২০১০