ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘বিচার ব্যবস্থাসহ সব ক্ষেত্রেই বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছি। এই বিপর্যয় থেকে মুক্তির জন্য গোটা দেশকে ৮টি প্রদেশে ভাগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সিস্টিউট মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ প্রাদেশিক সরকার পদ্ধতির পরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রাদেশিক সরকার বাস্তবায়ন কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ‘একটি স্বাধীন-সার্বভৌম, অর্থনৈতিক স্বনির্ভর, সুখী-সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদার দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হলেও আজও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়নি। ’
দেশে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও জঙ্গিবাদসহ নানা ধরনের অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক হানাহানি ও প্রতিহিংসার কারণে বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা। ’
এরশাদ বলেন, ‘সরকারকে জনগণের খুব কাছে পৌঁছে দিতে আমি উপজেলা ব্যবস্থা কায়েম করেছিলাম। কিন্তু তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিলুপ্ত করা হয়েছিল। ’
ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতি কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই শুনি স্কাই ওয়ে, ফাই ওভার, পাতাল রেল হচ্ছে। কিন্তু সেটি কবে হবে। সে পর্যন্ত ঢাকা শহর টিকে থাকবে তো?’
ঢাকা শহরের চাপ কমাতে ও প্রশাসনিক সমস্যা সমাধানে এরশাদ দেশকে ৮টি প্রদেশে বিভক্ত করার প্রস্তাব দেন।
এ পর্যায়ে তিনি লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা নিয়ে উত্তরবঙ্গ প্রদেশ, রাজশাহী, নাটোর, নওগঁাঁ, নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, বগুড়া, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলা নিয়ে বরেন্দ্র প্রদেশ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর নিয়ে নিয়ে জাহাঙ্গীর নগর প্রদেশ, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগরাছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান নিয়ে চট্টলা প্রদেশ, ফেনি, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া নিয়ে ময়নামতি প্রদেশ, খুলনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, যশোর, নড়াইল সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট নিয়ে জাহানাবাদ প্রদেশ এবং বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ভোলা ও বরগুনা নিয়ে চন্দ্রদ্বীপ প্রদেশ গঠনের প্রস্তাব দেন।
কমিটির সভাপতি মোস্তাফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন দলের মহাসচিব এবি এম রুহুল আমীন হাওলাদার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, রিন্টু আনোয়ার, এস এম ফয়সাল চিশতি, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নূর-ই হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, মাহজাবিন মোরশেদ এমপি, এইসএন শফিকুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১০