ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাবহুল ২৮ অক্টোবর আজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১০
রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাবহুল ২৮ অক্টোবর আজ

ঢাকা: আজ ২৮ অক্টোবর, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসের একটি ঘটনাবহুল দিন। ২০০৬ সালের এই দিনে রাজধানীর পল্টনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও সদ্য ক্ষমতাত্যাগী চারদলীয় জোটের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।



অভিযোগ রয়েছে ইয়াজউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সময়ে ১৪ দলের কর্মসূচিকে বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াতের দাবি ১৪ দলের লোকজনই তাদের ওপর লাগি-বৈঠা নিয়ে হামলা চালিয়ে হত্যা করে নেতা-কর্মীদের।  

১৪ দলীয় সূত্রের দাবি মতে সেদিনের ভয়াবহ সেই ঘটনাক্রমে ঢাকায় যুবলীগ নেতা জিনারুল ইসলাম ও মনির হোসেন, যুবমৈত্রী নেতা রাসেল আহমদ খানসহ সারাদেশে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হন সহ¯্রাধিক নেতা-কর্মী। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোটের দাবি একই ঘটনায় তাদেরও বেশ কয়েকজন নিহত ও অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।  

যা ঘটেছিল সেদিন

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এদিন পল্টন ময়দানে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ছিল। অপরদিকে বিএনপিও পাল্টা কর্মসূচি পালনে অবস্থান নেয় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। একই সময়ে জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচি ছিল বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে।

এ সময়ে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে নিজ নিজ দলের কর্মসূচিস্থলে আসতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে পল্টনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।

মূহুর্তেই লগি-বৈঠা ও লাঠি-বাঁশের মিছিলে সরগরম পুরো পল্টন এলাকা বিস্ফোরণোম্মুখ রূপ নেয় যখন মিছিলে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। দুপুরের পর সংঘর্ষ আরও মারাত্মক রূপ নিলে অসহায় পুলিশ পিছু হটে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেয়।

এ সময়ে বেপরোয়া গুলিবর্ষণে যুবলীগের দু’জন ও যুবমৈত্রীর এক নেতা নিহত হন। গুলিবর্ষণ ও অন্যান্য অস্ত্রের আঘাতে আহত হন আরো অসংখ্য নেতা-কর্মী। প্রতিক্রিয়ায় বিুব্ধ জনতার প্রহারে কয়েকজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। জামাত-শিবির তাদেরকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করে।

অপরদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নামে পুলিশ বাহিনী জামায়াত-শিবিরের প নিয়ে ১৪ দল সমর্থকদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিপে করে। এতে আহত হন অনেকে। ওইদিন সংঘর্ষে উভয়পরে অন্তত সাতজন নিহত হন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

এ ঘটনায় পরে উভয়প পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে।

এদিনের সংঘর্ষে রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ছয়জন এবং ছাত্রমৈত্রীর একজন কর্মী প্রাণ হারান বলে রাজনৈতিক সূত্রগুলো দাবি করে। প্রকাশ্যে পিটিয়ে মানুষ হত্যার পর লাশের ওপর উঠে নাচানাচির ঘটনা  টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের ফলে দেশে বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

এরপর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পল্টন ও শাহবাগ থানায় পৃথক পাঁচটি মামলা করা হয়। এ ছাড়া ছাত্রমৈত্রীর রাসেল খান নিহতের ঘটনায় ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান বাদী হয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ মোট ১০ জনকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন।

এছাড়া সহিংস ঘটনায় আহত মিজানুর রহমান, রেজাউল করিম ও আমানুর রহমান আমানের পক্ষে আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে পল্টন থানায় আরও তিনটি মামলা করেন। আশরাফুজ্জামান নামের অপর এক আহত রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় একটি মামলা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, অক্টাবর ২৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।