ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

সমন্বয়হীনতা নিয়ে আ’লীগ সভায় ক্ষোভ

শামীম খান, সিনিয়র করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১০
সমন্বয়হীনতা নিয়ে আ’লীগ সভায় ক্ষোভ

ঢাকা : মন্ত্রীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সংসদীয় কমিটির সভাপতির সমন্বয়হীনতা নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এদের মধ্যে সমন্বয়েরও দাবি জানানো হয়।



শনিবারের কার্যনির্বাহী সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এ কথা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা বাংলানিউজকে জানান, দলের কার্যনির্বাহী সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সভায় নাসিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা দলীয় কর্মীদের চাকরি দিতে পারছেন না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে বিতর্কিত করছেন ঠিকই। ’

তিনি প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘এ উপদেষ্টা দলীয় কর্মীদের চাকরি দিতে চাইলে দিক, সেটা প্রকাশ্যে কেন বলতে গেলেন। এরা কর্মীদের চাকরিও দিতে পারছেন না, আবার দলকেও বিতর্কিত করছেন। ’

যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এ অভিযোগ এনে নাসিম বলেন, ‘শুধু যুবলীগ-ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে হবে না। এদের পেছনে মন্ত্রী এমপি যারা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। ’

 মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের তাগিদ দেন তিনি।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, দ্রব্যমূল্য কমানো, বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট ও যানজট সমস্যার আশু  সমাধানের তাগিদ দিয়ে নাসিম বলেন, ‘সমাধান করতে না পারলে আগামী নির্বাচনে এগুলোই সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। ’
 
সভায় নাটোর হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি উঠলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ আছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের হোক আর দলের বাইরের হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ’

সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান নেতারা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হাইকোর্ট যে রায়ই দিক সেটা তাকে (খালেদা জিয়া) মেনে নিতেই হবে। তার তো গুলশানে একটা বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এরপরও তিনি কেন ক্যান্টনমেন্টে বসে রাজনীতি করবেন?’

শেখ হাসিনা বিরোধী দলে থাকার সময় তাকে ক্যান্টনমেন্টে ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।

এছাড়া খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর প্যারোল নিয়েও আলোচনা হয় সভায়।

তারেক-কোকোর প্যারোল বাতিল করা উচিত বলে মন্তব্য করেন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘প্যারোলেরও একটা সীমা থাকে। আইন সবার জন্যই সমান। তাদের (তারেক-কোকো) প্যারোল তো সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ’

আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনের আগে দলের তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন না করার প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, ‘এখন সম্মেলন করলে যারা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান, তারা প্রার্থিতার প্রতিযোগিতায় নিজের পক্ষে সমর্থন ভারীর চেষ্টা করবেন। টাকা খরচ করে কমিটিতে নিজেদের লোক ঢোকানোর চেষ্টা চালাবেন। ’

সভায় পৌর নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে পরোক্ষভাবে দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদেও দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মনোনয়নের বিষয়টি কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়টি আলোচনায় উঠলে নেতারা নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর কথা বলেন।

বর্তমান মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিরোধী দলের হওয়ায় তিনি নাগরিক সুবিধার ব্যাপারে উদাসীন বলেও অভিযোগ করেন কেউ কেউ।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে তৎপর হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী দির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।