ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

আওয়ামী লীগের ডজনখানেক নেতা নিস্ক্রীয়

শামীম খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১০
আওয়ামী লীগের ডজনখানেক নেতা নিস্ক্রীয়

ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির ডজনখানেক নেতা রাজনীতি থেকে নিস্ক্রীয় হয়ে পড়েছেন। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দলীয় কোনো কর্মসূচিতে হাজির হচ্ছেন না তারা।



বিশেষ করে বিগত কার্যনির্বাহী কমিটির ৭ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদকমণ্ডলীর ক’জন সদস্য দলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। এদের কেউ কেউ সংসদ ও দলের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকলেও রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকায় তাদের দেখা যাচ্ছে না।

গত বছরের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়ার কারণেও কেউ কেউ নিস্ক্রীয় হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

বর্তমান কমিটির কোনো পদে না থাকা উল্লেখযোগ্য নেতারা হলেন- সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুকুল বোস, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও বীর বাহাদুর, সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপিকা নাজমা রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আলমগীর কুমকুম, সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, মির্জা সুলতান রাজা, আখম জাহাঙ্গীর হুসাইন, হাবিবুর রহমান খান প্রমুখ।

সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান ও আব্দুর রহমান বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে থাকলেও দলীয় কর্মসূচিতে তাদের সরব উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক সাবের হোসেন চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, আব্দুর রহমান ও সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে সাংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু সাংসদ হিসেবে যার যার নির্বাচনী এলাকার লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ ও সংসদ অধিবেশনে অংশ নেওয়ার মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রয়েছে।

এসব নেতার দলের মধ্যে নিস্ক্রীয়তার বিষয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘এসব নেতা এক সময় আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে দলীয় ফোরামে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকলেও বর্তমানে দলে তাদের কোনো পদ নেই। দলের নীতি নির্ধারণী কর্মকাণ্ডেও তাদের ভূমিকা রাখার কোনো সুযোগ নেই। তাই দলের কোনো কর্মসূচিতেও তাদের অধিকাংশই আসেন না।

বর্তমানে নিস্ক্রীয় হয়ে পড়া দলের সাবেক এক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্ষেপ করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা যাদের হাতে ধরে তৈরি করেছি এখন তাদের অধীনে রাজনীতি করছি। তারা নেতা আমরা কর্মী। ’

সাবেক এক কার্যনির্বাহী সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা দলের কোনো কর্মকসূচিতে গেলে ঢুকতে পারিনা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কাছে আমাদের নামের তালিকা থাকে না। দলের দায়িত্বশীল নেতা এবং সভানেত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারিরাও আমাদের সহযোগিতা করেন না। ’

দলের কার্যনির্বাহী কমিটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির পর কিভাবে কাজ করছেন জানতে চাইলে মুকুল বোস বাংলানিউজকে বলেন, ‘দলে আছি। কিন্তু আমাদের তো কোনো দায়িত্ব নেই। দলের কর্মসূচিতেও আমাদের ডাকা হয় না। ’

তিনি বলেন, ‘এখন এলাকার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি। আর পারিবারিক কাজকর্মের মধ্য দিয়ে সময় কাটাই। ’
   
সুলতান মুহাম্মদ মনসুর আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাজনীতিতে আছি। দলের কোনো দায়িত্বে না থেকেও কর্মীদের সঙ্গে যতটুকু যোগাযোগ রাখা যায় রাখছি। এলাকায় যাই, লোকজনও আসে দেখা করতে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘কিছু প্রোটোকল আছে। তাই অনেক সময় দলের জাতীয় কর্মসূচিতে যেতে পারি না। ’

আখম জাহাঙ্গীর হুসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ‘পারিবারিক পরিবেশে সময় কাটছে। এলাকার লোকজন এলে দেখা করি, কথা হয়। ’

তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেট টিমের সফল অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীকেও তো গ্যালারিতে বসে খেলা দেখতে হয়। নেত্রী (শেখ হাসিনা) যদি কখনো মনে করেন, ডাকেন, কোনো দায়িত্ব দেন অবশ্যই সেটা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করবো। ’

হাবিবুর রহমান খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সারা জীবনই আওয়ামী লীগ করে যাচ্ছি। বিকল্প তো কিছু ভাবতে পারি না। কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। ’

জাতীয়ভাবে দলের যে সব কর্মসূচি পালন হয় সেগুলোতে ইচ্ছা থাকলেও সংগত কারণে অংশ নিতে পারেন না বলেও আক্ষেপ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।