ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অফবিট

নিরাপদ ভবিষ্যতের সহায়ক ডুমুর!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
নিরাপদ ভবিষ্যতের সহায়ক ডুমুর! ছবি: সংগৃহীত

৮০ মিলিয়ন বছর আগে উদ্ভূত প্রাগৈতিহাসিক ডুমুর গাছ সভ্যতাগুলোর সংস্কৃতি গড়তে সহায়তা করেছে। সভ্যতার পতন দেখেছে, এমনকি ধ্বংসাবশেষ আড়াল করতেও সাহায্য করেছে।

গুয়াতেমালার তিকালের মায়ান পিরামিড ও কম্বোডিয়ার অ্যাংকর ওয়াটের খেমের মন্দির ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তবে খরা-পীড়িত মানুষকে সেখানে প্রতিস্থাপিত করেছে শক্তিবাহী ডুমুর।

প্রতিটি ক্ষেত্রে, ডুমুর গাছের জঙ্গল পরিত্যক্ত ভবনগুলোকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হতে সাহায্য করেছে। তাদের বীজ পাথুরে ফাটলের মধ্যেও অঙ্কুরিত হয়েছে, তাদের শিকড় রাজমিস্ত্রির গড়া ভবনকে পৃথকভাবে কেটে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং তাদের ওজনের সঙ্গে দেয়াল চূর্ণ হয়েছে। পশুদের মাধ্যমে অন্যান্য প্রজাতির গাছের সঙ্গে ডুমুরের বীজ বিচ্ছুরিত ও প্রবাহিত হয়েছে। আর তাই, ডুমুর বন এ প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটগুলোকে উদ্ধার করতে সমর্থ হচ্ছে।

এ ক্ষমতা ক্রাকাতোয়া রেনফরেস্টের ক্ষেত্রে দেখা গেছে। ১৮৮৩ সালে এর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় গাছপালা ও জীববৈচিত্র্য। তবে লাভায় চাপা পড়া ডুমুর গাছ তাদের পুন:অধ্যুষিত হতে উৎসাহিত করেছে। নতুনভাবে বন গঠনেও তা সহায়ক ছিল। বিজ্ঞানীরা এ প্রভাবের ওপর ভিত্তি করে এখন এ বনের প্রতিলিপি নির্মাণ করছেন। ডুমুর গাছ রোপণ এলাকায় যেখানে গাছ হারিয়ে গেছে, সেখানে ক্রাকাতোয়া রেনফরেস্টের পুনর্জন্মকে দ্রুততর করেছে।

এসবের অর্থ ডুমুর গাছ পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে একটি ভবিষ্যতের আশা প্রদান করতে পারে।

উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষ নদীর বাঁধ ও শক্তসমর্থ সেতু গঠনের সঙ্গে ডুমুর গাছকে কাজে লাগান। মৌসুমী বৃষ্টিপাতে প্রাণ টিকিয়ে রাখতেও ডুমুরের শিকড় সহায়তা করে। ইথিওপিয়ায় ডুমুর গাছ কৃষকদের ফসল এবং ছাগলসহ পশুখাদ্যের অত্যাবশ্যক উপকরণ। আলো-ছায়া দিয়ে খরার সঙ্গে দেশটির মানুষকে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করছে।

সব মিলিয়ে, ডুমুর গাছ আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের রাশ টেনে ধরা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও জীবিকার উন্নতিতে সাহায্য করে আসছে। যতোদিন আমরা এ গাছ রোপণ ও রক্ষা করতে পারি, ততোদিনই আমাদের জন্য সহায়ক এটি।   যেমন মানবজাতির সহস্রাব্দ বছরের ইতিহাসে অবিরত করে আসছে।

পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতিতেই ডুমুর গাছ নিধনে সহায়ক বস্তুকে হারাম ও এ গাছকে উন্নত করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত আজ এ বিশ্বাস স্মৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের পুনরুজ্জীবিত করতে পারলে আমাদেরই ভালো হবে।

ডুমুরের দীর্ঘ ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ৮০ মিলিয়ন বছরের দীর্ঘ বয়সের মধ্যেও এটি পৃথিবীর সর্বকালের সাম্প্রতিক উদ্ভিদ। যদি আমরা পরিকল্পিতভাবে এ গাছকে রক্ষা করি, আমাদের ভবিষ্যত আরও নিরাপদ থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
এএসআর

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।