ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অফবিট

স্বজাতির মাংস খেকো প্রাগৈতিহাসিক মানুষেরা 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
স্বজাতির মাংস খেকো প্রাগৈতিহাসিক মানুষেরা  ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষ একদল মানুষ একে অন্যের মাংস খেতো। কিন্তু এর কারণ আজ পর্যন্ত উদ্‌ঘাটিত হয়নি।  

প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষ একদল মানুষ একে অন্যের মাংস খেতো। কিন্তু এর কারণ আজ পর্যন্ত উদ্‌ঘাটিত হয়নি।

 

যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলের কাছাকাছি গফ গুহায় পাওয়া ওই মানুষদের জীবাশ্ম পরীক্ষা করে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে,  তারা পাথরের হাতিয়ার দিয়ে স্বজাতির মাংস হাড় থেকে বিচ্ছিন্ন ও টুকরো করে তারপর চিবাতো। হাড়গুলোও  চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ভেতরের মজ্জা বের করে খেতো।

শুধুমাত্র যে প্রাপ্তবয়স্কদের খাওয়া হতো তাই নয়, তিন বছর বয়সী শিশু ও দুই কিশোর-কিশোরীকে কেটে খেয়ে ফেলার চিহ্ন ছিল।

তাদের মাথার খুলি ‘মস্তক কাপ’ হিসেবে পান করার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে বা পরিবর্তন করা হয়।

১৮৮০ সালে গফ গুহায় প্রথম খনন করে কিছু জীবাশ্ম উদ্ধার করা হয়। ১৯৮০ সালে আরেক দফা খনন কাজ শেষে সেটি যে কসাইখানা ছিল, তার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো পাওয়া যায়। অসংখ্য মানুষ ও প্রাণীর দেহাবশেষ নিয়ে দশকজুড়ে ব্যাপক বিশ্লেষণের পর গবেষকরা এ সিদ্ধান্তে আসেন যে, এ গুহা থেকে মানুষের হাড় বিচ্ছিন্ন ও চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হয়েছে।  

নির্জন ও প্রত্যন্ত গফ গুহার মানুষের রাক্ষুসে আচরণ মানুষের অন্ধকার বিভীষিকাময় প্রকৃতির একটি অনুস্মারক হিসেবেও কাজ করে। কেননা, এটি ১ লাখ বছর আগে নিয়ান্ডারথাল মানুষের মধ্যেও ছিল।  

ফ্রান্সে পাওয়া নিয়ান্ডারথাল মানুষের জীবাশ্ম পরীক্ষা করে জানা গেছে, ১ লাখ বছর আগে থেকেই তারা তাদের বন্ধুদের (বা শত্রু) মাংস চিবিয়ে খেতো। এ ধরনের প্রমাণ আরও পাওয়া গেছে। ৪৯ হাজার বছর আগের একদল নিয়ান্ডারথাল উত্তর স্পেনের একটি গুহায় বাস করতো, তারাও নরমাংসভুক ছিল। বেলজিয়ামের একটি গুহা থেকে পাওয়া আরেকটি দলের হাড় পরীক্ষা করে গত জুলাই মাসে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত দেন যে, তারা একে অপরকে খেয়ে ফেলতো।  

হিংসাত্মক এসব হত্যা ও স্বজাতিকে খেয়ে ফেলার সঠিক কারণ বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করতে পারেননি। তবে তারা মনে করেন, অন্যের মাংস খাওয়ার খাদ্যাভ্যাস তাদের একটি সংস্কৃতি ছিল। আবার বেঁচে থাকার জন্য একে অপরের শত্রু হয়ে উঠতো। গুহায় বসবাসকারী মানুষের একটি অনুষ্ঠান বা সমাধি অনুশীলনের অংশ হিসেবে খুলির কাপ তৈরি করা হতে পারে।  

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রিক স্কালটিং বলেন, নরমাংস ভক্ষণ প্রথা এখন বিরল। কিন্তু আমাদের প্রাগৈতিহাসিক পূর্বপুরুষের মাঝে দ্বন্দ্ব, মানুষের মৃত্যু এবং কসাই বা মাংস বাটোয়ারার প্রমাণ প্রচুর থাকায় এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তিনি উদাহরণ দেন, আমেরিকার দক্ষিণ পশ্চিমের (আধুনিক কলোরাডো) একটি আদিবাসী অঞ্চলে প্রায় ৯০০ বছর আগে এ প্রথা সংঘটিত হয়েছিল। এটি তীব্র খরার সময়ে ঘটেছে। কিন্তু স্কালটিং বলছেন যে, এর অর্থ এই নয় যে মানুষ খাদ্যের জন্য একে অপরকে খেয়ে ফেলতো। তিনি মনে করেন, ‘সম্পদের ওপর মারাত্মক দ্বন্দ্ব’ এটি ঘটতো।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৭  ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad