এদিকে মঙ্গলবার বিকেল থেকে রেললাইনে পানি ওঠায় জামালপুর থেকে ট্রেন দেওয়ানগঞ্জ পর্যন্ত যেতে না পারায় ইসলামপুর পর্যন্ত চলাচল করছে।
বুধবার (১৫ জুলাই) সকালে যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়ে বিপদসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দ্বিতীয় দফার বন্যায় জেলার ৭টি উপজেলায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ১৫ দিনের ব্যবধানের দ্বিতীয় দফা বন্যায় মানুষের মধ্যে দেখা দিয়ে চরম খাদ্য সংকট।
পানিবন্দি মানুষ পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত গরু-ছাগল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে। এসব মানুষজনকে আশ্রয় দিতে খোলা হয়েছে ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র।
ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধি প্রথম দফার রেকর্ড ভেঙেছে। সর্বত্রই এখন পানি। কোথাও শুকনো জায়গা নেই। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তা-ঘাটসহ ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। এসব এলাকায় এখন তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ও ভূমি অফিসসহ কয়েকটি সরকারি দফতর। বিভিন্ন বাজারে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ভোগান্তিতে রয়েছে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দেওয়ানগঞ্জ পৌর এলাকা ও ৮ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
পানিবাহিত রোগ দেখা দেওয়ায় বন্যা দুর্গত এলাকায় ২৩টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে বলে জানিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জামালপুর সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাশ বাংলানিউজকে জানান, এ পর্যন্ত বন্যাকবলিত এলাকায় ৮০টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এদিকে দেওয়ানগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি ঢোকায় কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে। এছাড়া দেওয়ানগঞ্জ আরও ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে পানি উঠেছে বলে জানান জেলা সিভিলি সার্জন।
বন্যার পানির কারণে মঙ্গলবার বিকেল থেকে জামালপুর টু দেওয়ানগঞ্জ রেললাইনের ইসলামপুর পর্যন্ত যোগাযোগ চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান রেল কর্তৃপক্ষ।
জামালপুর ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার শেখ উজ্জ্বল মাহামুদ বাংলানিউজকে জানান, ইসলামপুর থেকে দেওয়ানগঞ্জে বিভিন্ন জায়গায় পানি উঠে রেললাইন ডুবে যাওয়ায় আপাতত ইসলামপুর পর্যন্ত ট্রেন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই রুটে আন্তঃনগর ব্রহ্মপুত্রসহ ২টি লোকাল ট্রেন চলাচল করে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, জেলার জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে এবং এ বন্যা দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়; ১২৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
আরএ