ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা আক্রান্তের ঝুঁকির মধ্যেই স্বাভাবিক হচ্ছে নগরজীবন!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২০
করোনা আক্রান্তের ঝুঁকির মধ্যেই স্বাভাবিক হচ্ছে নগরজীবন!

ঢাকা: এখনো পিছু ছাড়েনি বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি। তবে জীবন ও জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসছেন তা জেনেই। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অফিস-আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা করছেন সবাই। ফলে প্রতিদিনই সড়কে বাড়ছে মানুষের সমাগম; ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে নগরজীবন।

করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে রাজধানীর দৃশ্যপট। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অনেকেই ঢাকাকে একা ফেলে গ্রামে চলে গেছেন।

আর যারা শহরে আছেন, তারাও অনেকে স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি। তবে তিন মাসেরও বেশি সময় ঘরে বসে থাকায় আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন এখন।

সোমবার (০৬ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশপথে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রসহ জীবাণুমুক্তকরণ মেশিন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখে করোনা প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে। যারা বাইরে বের হচ্ছেন তারা মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস, ফেসশিল্ডসহ বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে তবেই বের হচ্ছেন।

 

এছাড়া রাস্তাঘাট ও যানবাহনে অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। আর সকাল হতে না হতেই রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে যেমন মানুষের ভিড় বাড়ে, তেমনি বিভিন্ন অফিসের কর্মীরাও ছুটতে থাকেন তাদের গন্তব্যে।

নানা সুরক্ষাসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে অফিসে যাচ্ছেন অনেকে।  ছবি: রাজীন চৌধুরী

এ প্রসঙ্গে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী খালিদ হাসান বলেন, করোনার ভয়ে ঘরে বসে থাকলে অনেকটা না খেয়ে মরতে হবে। আয়-রোজগার না থাকলেও গত দু-তিন মাস বাসাভাড়া ও সংসার খরচ চালিয়ে জমানো অর্থের সিংহভাগই আর হাতে নেই। সকলেরই প্রায় একই অবস্থা। তাই সকলেই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিয়েই রাস্তায় বের হচ্ছেন।

কামরুল হাসান নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও করোনা মহামারিতে আক্রান্ত। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা থেকে মুক্তির প্রথম এবং প্রধান উপায় হচ্ছে ব্যক্তিগত সচেতনতা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। সেগুলো মেনে যদি চলাচল করা হয়, তবে ঝুঁকি অনেকটাই কম বলে মনে করি। আর সেভাবেই জীবিকার সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া।

এদিকে মানুষের পাশাপাশি ধীরে ধীরে রাস্তায় বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যাও। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় এখন অসংখ্য ছোটবড় যানবাহন। সড়কে বাস, প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্যাডেলচালিত রিকশা আগের তুলনায় বেড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশের এমন একাধিক সদস্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। তাদের কয়েকজন জানান, সপ্তাহখানেক আগেও সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এ মাসের শুরু থেকেই রাস্তায় বিপুলসংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।

কথা হয় রাজধানীর নিউ মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, ইস্টার্নপ্লাজাসহ বেশ কিছু মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তাদের কয়েকজন জানান, ব্যবসায়ীরা সারা বছর টুকটাক ব্যবসা করলেও অপেক্ষা করেন মূলত রমজানের ঈদের জন্য। এবার করোনার কারণে সেই বেচাকেনা হয়নি। গত মাস থেকে বিভিন্ন মার্কেটে সীমিত পরিসরে দোকান খুললেও বেচাকেনা ছিল না বললেই চলে। কিন্তু এই মাস থেকে ধীরে ধীরে বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিক হচ্ছে নগরজীবনের কার্যক্রম।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২০
এইচএমএস/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।