ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভোলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রকৃতির টানে মেঘনা পাড়ে মানুষ

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২০
ভোলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রকৃতির টানে মেঘনা পাড়ে মানুষ

ভোলা: ভোলায় করোনা ভাইরাসের মধ্যেও একটু নির্মল বাতাস আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে মেঘনা পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন শত শত মানুষ। তবে অন্যদিনের তুলনায় ছুটির দিনগুলোতে মানুষের ভিড় একটু বেশিই থাকে।

শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে মেঘনা পাড়ের তুলাতলীতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে দূর দূরন্ত থেকে আসা এসব মানুষ মুগ্ধ হচ্ছেন।

তবে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে পুলিশের নজরদারিও রয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নদীর উত্তাল ঢেউ, চারদিকে সবুজের সমারোহ, নানা ধরনের বৃক্ষরাজি, দূরের ডুবোচর, কাশবন,  নান্দনিক স্থাপনা আর বাহারি ফুলের সমারোহ নিয়ে মেঘনার তীর ঘেঁষে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা এক দর্শনীয় স্থান তুলাতলী।  

এখানেই এখন মানুষের একমাত্র বিনোদনের ভরসা। শহরের কোলাহলময় পরিবেশে ছেড়ে একটু বিনোদনের আশায় ছুটে আসছেন মানুষ। শিশুদের দোলনা, নাগরদোলা ও ঘোড়ায় চরে খেলা করতে দেখা যায়। কেউ আবার পানিতে নেমে হাঁটছেন। বড়দের মধ্যে কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেউবা সেলফি তুলছেন, আবার ছোট ছোট নৌকায় ঘুরেও বেড়াচ্ছেন। মেঘনা পাড় যেন সেজেছে নতুন সাজে। আর সেইসঙ্গে প্রকৃতিও যেন নিজ রূপে ফিরে এসেছে।  

ঘুরতে আসা কলেজ ছাত্রী সানজিদা হোসেন এশা বলেন, অনেকদিন পরে ঘুরতে বের হয়ে হয়ে ভালো লাগছে। এতোদিন বাসার মধ্যে থেকে বোরিং হচ্ছিলাম, তার জন্য বাইরে বের হয়ে একটু ফ্রেস লাগছে।

মেঘনা পাড়ে শিশুদের ছোটাছুটি।  ছবি: বাংলানিউজআরেক দর্শনার্থী লতা কবির বলেন, আমি বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি এতে নিজের যেমন ভালো লাগছে তেমনি বাচ্চারাও আপন মনে খেলছে। বাচ্চারা তো সব সময় ঘরেই থাকে, এখন একটু বের হয়ে ওদের ভালো লাগছে। আর জায়গাটা সত্যিই অনেক সুন্দর।

ছাত্রলীগ নেতা ইভান জানায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এখানে আমরা বন্ধুরা মিলে ঘুরতে এসেছি, ঘুরতে আসার জন্য তুলতলী অনেক ভালো একটি স্পট।

ঘুরতে আসা দর্শনার্থী লিটন শেখ জানান, করোনা ভাইরাসের মধ্যে দীর্ঘদিন বাড়িতে ছিলাম এতে খুবই বোরিং লাগছিলো, তাই একটু ঘুরতে এসেছি পরিচতি সব মানুষের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বেশ ভালো লাগছে।
 
টুটুল আমিন বলেন, মনটাকে প্রফুল্ল করার জন্য এবং একটু প্রশান্তির আশায় আমরা নদীর পাড়ে ঘুরতে এসেছি। করোনা ভাইরাস মহামারিতে যখন মানুষ গৃহবন্দি তখন একটু শান্তির পরশ নিতেই ছুটির দিনে বেড়াতে আসা।  

ভোলা শহর  থেকে তিন কিলোমিটার দূরের এ মেঘনা পাড় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে না উঠলেও কয়েকজন উদ্যোক্তা মিলে শাহবাজপুর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এটিকে দর্শনীয় স্থান করে গড়ে তুলেছেন।  

তাদের মধ্যে একজন ভোলা থিয়েটারের সম্পাদক সংস্কৃতিকর্মী আবিদুল আলম আবিদ বলেন, করোনা ভাইরাসের মধ্যে মানুষ বাসা-বাড়িতে থেকে অনেকটাই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিল, আজকে ছুটির দিনে এই প্রথম শাহবাজপুর পর্যটন কেন্দ্রে কিছু মানুষ ছুটে এসেছেন। বাইরের পরিবেশ, নির্মল বাতাস ও প্রকৃতি দেখার টানেই মানুষ ছুটে এসেছেন।

এ ব্যাপারে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পাড়ে সেদিকেও পুলিশের নজরদারি রয়েছে। কারণ প্রতিটি দর্শনার্থী যাতে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে জন্য কাজ করছে পুলিশ।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।