ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎশিল্পীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎশিল্পীরা

নীলফামারী: করোনাকালে ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎশিল্পীরা। বৈশ্বিক এ মহামারির কারণে মেলা, উসব বন্ধ থাকায় তাদের উৎপাদিত পণ্য বেচা-কেনা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকটে পড়েছেন উত্তরের নীলফামারীসহ বিভিন্ন স্থানের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা। ফলে মৃৎশিল্পীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। 

করোনা ভাইরাসের কারণে এবার বাংলাদেশের বড় উৎসব চৈত্র সংক্রান্তির (চড়ক পূজা) ও বাংলা নববর্ষ পালিত হয়নি। বসেনি কোনো মেলা বা প্রর্দশনী।

হাট-বাজার চলছে স্বাস্থ্যবিধি ও সীমাবন্ধ সময়ের মধ্যে।  

বর্তমান সংশ্লিষ্টরা জানান, এ সম্প্রদায়ের লোকজন বেঁচে থাকে বাংলা নববর্ষের মেলা এবং প্রদর্শনীর আয়োজন ঘিরে। করোনার কারণে এ বছর সব কিছু থমকে গেছে।

নীলফামারী জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের উত্তর মুসরত কুখাপাড়া গ্রামের শৈলেন চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, করোনার জন্য সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।  

ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎশিল্পীরা

অনাহারে-অর্ধাহারে চলছে তাদের জীবন। ভালো নেই তারা। তৈরি করা বহু মাটির তৈজসপত্র অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।  

ওই গ্রামের শঙ্কর চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে হাট-বাজার সময়সীমার মধ্যে পরিচালিত হওয়ায় ঠিক মতো ব্যবসা চলছে না। নববর্ষ বা বৈশাখে যে আয় রোজগার করা হতো, সেই আয় দিয়ে বছর চলে যেতো। করোনা ভাইরাস আমাদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। ফলে চরম বিপাকে পড়েছি আমরা।

তিনি বলেন, এবার মৃৎশিল্পের ব্যবসার চিত্র ভিন্ন। মাটির তৈরি হাজার হাজার তৈজসপত্র রয়েছে মৃৎশিল্পীদের কারখানায়। এই সম্প্রদায়ের মানুষের রুজি-রোজগার প্রায় বন্ধের পথে। বিভিন্ন পেশার মানুষজন সরকারের প্রণোদনা পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দিকে কেউ মুখ ফিরে চেয়ে দেখে না।

জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া পালপাড়া গ্রাম। এখানে মৃৎশিল্পীর প্রসারতা অনেক বড়। এখানকার করুনা কান্ত পাল বাংলানিউজকে বলেন, চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছি। ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান, মেম্বাররা আমাদের দিকে ফিরেও তাকায়নি। করোনাকালে সরকার কতো কিছু ত্রাণ দিল। আমাদের ভাগ্যে জুটেনি কিছুই। বার বার ধরনা দিয়েও আমাদের নাম তালিকায় দেয়নি।  

ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎশিল্পীরা

করুনা কান্ত পাল আরও বলেন, করোনার কারণে আমাদের তৈরি জিনিসপত্রের বিক্রি করনে না পারায় বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আমরা তো মাটি কিনে এনে তৈজস্যপত্র তৈরি করি। এ অবস্থায় এখানকার প্রায় ২০০ পরিবার চরম বিপাকের মধ্যে পড়েছে।  তাই মৃৎশিল্পীদের জন্য সরকারি প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি।

দি সৈয়দপুর বণিক সমিতির সভাপতি মো. ইদ্রিস আলী বাংলানিউজকে বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৃৎশিল্পীরা ব্যাপক অবদান রাখেন। সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে। সরকার যদি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে মৃৎশিল্পীদের তালিকা করে ক্ষুদ্র ঋণসহ প্রণোদনার আর্থিক সুবিধা দিতে পারে তাহলে অন্তত টিকে থাকতে পারবেন তারা। মৃৎশিল্প সম্প্রদায় আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐহিত্যকে বিলুপ্তের হাত হতে রক্ষা করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।