ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রকৌশলী হতে চায় তাঁতী সোহেল

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২০
প্রকৌশলী হতে চায় তাঁতী সোহেল সোহেল রানা

লালমনিরহাট: দরিদ্র তাঁতী বাবার সঙ্গে তাঁত বোনার পাশাপাশি লেখাপড়া করে গোল্ডেন-এ পেয়েছে অদম্য মেধাবী তাঁতী সোহেল রানা। প্রকৌশলী হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার স্বপ্ন নিয়ে লেখাপড়া করলেও দারিদ্রের কষাঘাতে আজ তা মলিন হতে বসেছে।

সোহেল রানা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের উওর ধুবনী গ্রামের তাঁতী ঠান্ডু মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, দেশের কাপড়ের চাহিদা পূরণের কারিগর তাঁতীদের এক সময় বেশ কদর থাকলেও আধুনিক বিশ্বে তাঁত শিল্প ধ্বংসের দাঁড়প্রান্তে।

অলাভজনক হলেও বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন উত্তর ধুবনী গ্রামের বেশ কয়েকজন তাঁতী। এ পেশার একজন দক্ষ কারিগর ঠান্ডু মিয়া। অভাব অনটনের কারণে বড় ছেলে ও বড় মেয়েকে লেখাপড়া শিখাতে পারেননি। উপর্জনের জন্য তাদের পোশাক কারখানায় পাঠিয়েছেন। ছোট ছেলে সোহেল রানাকে সঙ্গে নিয়ে চলে তার তাঁত বোনার কাজ। বাবার সঙ্গে কাজ করে সোহেলও দক্ষ তাঁতী হয়ে উঠেছে। অর্থ কষ্টের মধ্যেও সোহেলকে বিদ্যালয়ে পাঠান তাঁতী ঠান্ডু মিয়া। সোহেল বাবার সঙ্গে তাঁত বোনার কাজ করেও পিএসসি এবং জেএসসিতে গোল্ডেন-এ প্লাস অর্জন করে গ্রামবাসীকে তাক লাগিয়ে দেয়।

বৃত্তির টাকায় ফরমপূরণ করে চলতি বছর হাতীবান্ধা এসএস উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন-এ প্লাস অর্জন করে সোহেল। ভাল ফল সবাইকে আনন্দ দিলেও হতাশায় পড়েছে সোহেল। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি আর লেখাপড়ার খরচ চালানো তার গরিব বাবার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কলেজে ভর্তি নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জীবনে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্নও ভেঙে যেতে বসেছে সোহেলের।

অদম্য মেধাবী সোহেল রানা (মোবাইল-০১৪০৪১৫০৯৯)  বলেন, ভর্তি হতে পারলে এইচএসসিতেও গোল্ডেন-এ প্লাস নিতে পারব। কিন্তু কলেজে ভর্তি ও পড়ালেখার খরচ যোগানোর মত টাকা বাবার কাছে নেই। বিগত জীবনে অর্থ কষ্টে অনেকবার লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছিল। বাবার সঙ্গে কাজ করে এবং বৃত্তির টাকায় তা কাটিয়ে উঠেছি। বর্তমানে বৃত্তির টাকা পাওয়ার সুযোগ নেই। তাই প্রকৌশলী হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার স্বপ্নও নষ্ট হতে বসেছে। মাঝ পথে দাঁড়িয়ে দারিদ্রতার কাছে হেরে যেতে চাই না। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহায়তা চাই।

হাতীবান্ধা সরকারি এসএস উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম প্রধান জুয়েল বলেন, সোহেল রানা একজন মেধাবী ও ভদ্র শিক্ষার্থী। তার পরিবারে আর্থিক সংকট রয়েছে। কেউ সোহেল রানাকে সহযোগিতা করলে সে একদিন দেশের সম্পদ হয়ে উঠবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।