মঙ্গলবার (২ জুন) বিকেলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের লোকজন ও সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংগঠনটির বেশ কয়েক নেতা-কর্মী জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের সভাপতি পদে থেকে সমিতির কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন সেলিম আহমদ ফলিক।
শ্রমিকরা জানান, হামলার ঘটনার সময় ফলিক মিয়ার ছেলে এনা কাউন্টার থেকে বেরিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। এতে করে শুরুতে শ্রমিকরা পিছু হটেন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফের শ্রমিকরা জড়ো হলে ফলিকের ছেলের নেতৃত্বে আবারও তাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ জানান সাধারণ শ্রমিকরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ব্যাপারে সাবেক শ্রমিক নেতা আব্দুল হামিদ লেচু মিয়া বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের অ্যাকাউন্টে প্রায় ১২ হাজার শ্রমিকের ২ কোটির মতো গচ্ছিত টাকা থাকার কথা। করোনায় ছুটিতে কাজ বন্ধ থাকায় ওই টাকা থেকে শ্রমিকদের সহায়তার বিষয়টি সামনে আসে। ২৮ রমজানের দিকে মিতালি পরিবহন শ্রমিক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি জসিম উদ্দিন ফোন করে ফলিক মিয়াকে এ ব্যাপারে বলেন। ফলিক সে সময় অমার্জিত ভাষায় জবাব দেন, এ টাকা কী শ্রমিকদের বাপের? তার কাছে কোনো টাকা নেই বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ২৭ লাখ টাকা ছিল, তা দিয়ে নেতাদের বেতন দিয়ে দিছি।
ফলিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে খালেদ আহমদ নামের এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, লকডাউন চলাকালে সমিতির ১২ হাজার কর্মহীন শ্রমিক দুর্বিসহ জীবন যাপন করে, কিন্তু সমিতিতে জমা ২ কোটি টাকা থেকে সহায়তা চাইলে তার হদিস দিতে পারেননি ফলিক। তিনি শ্রমিক ইউনিয়নের জন্য কেনা ৩টি বাস নামেমাত্র ৫৯ লাখ টাকায় নিয়ে যান। ছেলেকে আমেরিকা পাঠানোর জন্য সমিতি থেকে ১২ লাখ ও ভাতিজীর বিয়ের জন্য আরও ২ লাখ টাকা উত্তোলন করেও ফেরত দেননি। অন্যদিকে রমজানে শ্রমিকরা সাহায্য চাইলে তিনি তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। এসব ঘটনার জেরে শ্রমিকরা মঙ্গলবার বিক্ষোভ করলে ফলিক মিয়ার ছেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালান।
এ বিষয়ে জানতে সেলিম আহমদ ফলিকের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সিলেট পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ বলেন, মূলত টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এছাড়া ফলিক মিয়ার ছেলে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন।
এ বিষয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২০
এনইউ/এইচজে