জানা গেছে, ঈদকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে জনসমাগম ও আড্ডা। এছাড়া এর আগে জেলা সদরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলে বেচাকেনা।
জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলা সদরে মঙ্গলবার (২৬ মে) সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা বাজার চলে। এখানে কোনো স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গায়ে গায়ে মিলে চলে দিনব্যাপী বেচাকেনা।
পৌর এলাকার বাসিন্দা মামুন মুন্সি বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও ঈদ উপলক্ষে প্রায় সবাই করোনা সংক্রমণের কথা ভুলে গেছেন। গত কয়েকদিনের ঈদ কেনাকাটাসহ এখনও ঘোরাফেরায় তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এখানে আজও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ থেকে বেশ লোকজন আসছেন। তারা কোনো ধরনের হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে প্রকাশ্যে আড্ডা দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার ও গত সোমবার (২৫ মে) জেলার ঈন্দুরকানী উপজেলার শেখ ফজলুল হক মনি ব্রিজ, জেলার ভাণ্ডারিয়া সদর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে দর্শনার্থী ও বাজার করতে আসা লোকদের ছিল ব্যাপক ভিড়। এছাড়া জেলার মঠবড়িয়া পৌর শহরের বাজার, মাছবাজার, সদর রোড, পৌরসভা রোড, কে এম লতিফ সুপার মার্কেট সংলগ্ন মোটরসাইকেল স্ট্যান্ডে মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।
এদিকে জেলার নাজিরপুরের দীর্ঘা ব্রিজ, শ্রীরামকাঠী বন্দরের গুদাম সংলগ্ন ব্রিজেও বেশ জনসমাগম হয়।
নাজিরপুরের দীর্ঘা ব্রীজ এলাকার স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে এখানে জনসমাগমের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে দর্শনার্থীরা চলে যান। সেখানে যাওয়া নাজিরপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিকেলে কিছু লোক হাওয়া খেতে এখানে এলেও আমি সেখানে যাওয়ার খবর পেয়ে তারা চলে গেছেন।
জানা গেছে, জেলার বিশেষ দর্শনীয় স্থান ও পার্কগুলোতে পুলিশের পাহাড়ায় থাকলে সেখানে জনসমাগম ছিল না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ডিসি পার্ক, ভাণ্ডারিয়ার হরিণ পালা ইকো পার্ক, জেলা সদরের বলেশ্বর নদের উপর স্থাপিত বলেশ্বর ব্রিজ প্রধান দর্শনীয় স্থান হলেও সেখানে ছিল পুলিশি পাহাড়া। এসব স্থানে পুলিশ কাউকে প্রবেশ করতে দেননি।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে শহরের বলেশ্বর ব্রিজে গেলে দেখা যায় সেখানে পুলিশ প্রহরায় দুই পাড়েই রয়েছে বাঁশ দিয়ে আটকানো। যানবাহন এলেই কেবল মাত্র পুলিশ বাঁশ খুলে দিচ্ছে।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বাদল বাংলানিউজকে বলেন, জনসমাগম প্রতিরোধে সদর উপজেলার বলেশ্বর ব্রিজে দুইজন এসআইসহ সাতজন পুলিশ মোতায়ন করাসহ শহরের বিশেষ বিশেষ স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়া কোনো মোটর ছোট যানবাহনে দুইয়ের অধিক যাত্রী দেখা গেলে তাদের নামিয়ে দেওয়াসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের জন্য তাগিদ চলছে।
জেলা সচেতন নাগরিক সমাজের স্বজন সমন্বায়ক মো. খালিদ আবু বাংলানিউজকে বলেন, জেলা সদরের ৫০ শতাংশের বেশি লোকজনকে মাস্ক ছাড়াসহ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে চলতে দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি আমাদের আতঙ্কিত করছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঈদ পালন করতে আসা লোকজন ঈদ করে চলে যাবেন। কিন্তু তারা করোনা ছড়িয়ে আমাদের বিপদে ফেলে যাচ্ছেন। বিষয়টির প্রতি প্রশাসনের খেয়াল রাখতে তিনি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১২ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২০
আরবি/