ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘করোনা প্রতিরোধে সরকারে সমন্বয়হীনতা রয়েছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
‘করোনা প্রতিরোধে সরকারে সমন্বয়হীনতা রয়েছে’ অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকের একটু মুহূর্ত

ঢাকা: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়য়হীনতা রয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (২৩ মে) নাগরিক সংগঠন সুজন-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত 'করোনা ভাইরাসের মহামারি: বিরাজমান বাস্তবতা ও করণীয়' শীর্ষক অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বৈঠকটিতে আলোচনার সূত্রপাত করেন সুজন-এর নির্বাহী সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইডিসিআর-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক আহমেদ ও ডা. এম এইচ লেনিন চৌধুরী।  

বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান, সহ-সভাপতি ড. হামিদা হোসেন, সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত ও গোলাম মোর্তজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, আইনজীবি ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।

ডা. মুশতাক আহমেদ বলেন, মহামারি মোকাবিলার প্রথম শর্ত হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ করার স্বাস্থ্য কাঠামো আছে কিনা, স্বাস্থ্য সেবার  দেয়ার মতো যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর্মী আছে কিনা সেটা নিশ্চিত করা। সারাদেশে জালের মতো বিস্তৃত স্বাস্থ্য কাঠামোই মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ ধুলাবালি খেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করেছে, এমন কথার কোনো ভিত্তি নেই। সেটা হলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এত বাংলাদেশি মারা যেত না, বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব খারাপ। তাই ঘনবসতিপূর্ণ  এলাকাগুলোতে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার আগেই স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করে গণকমিটির মাধ্যমে ঘরে ঘরে স্বাস্থ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে।

ডা. এম এইচ লেনিন চৌধুরী বলেন, আমরা সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়য়হীনতা লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা থেকে সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। যখন নিয়ন্ত্রণ করার সময় তখন সবাইকে বাড়িতে যেতে দেওয়া হচ্ছে, আবার সেখানেও যাদের গাড়ি আছে, তাদের জন্য সুবিধা করে দেওয়া। একটা সমন্বয়ের জায়গায় আসতে হবে অন্যথায় এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।    
 
ড. আসিফ নজরুল বলেন, পরিকল্পনা হতে হয় তথ্যভিত্তিক। আমাদের এখানে তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সম্পূর্ণতা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন আছে। দ্বিতীয়ত আমাদের সুচিন্তিত কোনো পরিকল্পনা নেই। পরিস্থিতির চাপে পড়ে সরকার হুটহাট করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা খুবই চিন্তার বিষয়।  
     
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা ত্রাণের কথা যত শুনি, চিকিৎসার কথা তত শুনতে পাই না। গণস্বাস্থ্যের কীটের কী অবস্থা আমরা সেটা জানতে চাই।    

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। সরকার তথ্য নিয়ন্ত্রণে গ্রেপ্তার, হয়রানী করছে। যার ফলে মানবাধিকারের অবস্থা অন্ত্যন্ত শোচনীয় হয়ে উঠেছে।  

সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতকে প্রমোট করে এসেছি, আমাদের এই পলিসি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।  

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সচেতনতা হচ্ছে এই ধরনের ভাইরাস মোকাবিলার একটা বড় জায়গা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, আমাদেরকে দীর্ঘদিন এই ভাইরাসের সাথে বসবাস করতে হতে পারে। তাই এই ভাইরাস সহিঞ্চু হিসাবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
ডিএন/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।