ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নানীর দেওয়া পোশাক কেনার টাকা দিয়ে দরিদ্রদের ঈদের নাস্তা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
নানীর দেওয়া পোশাক কেনার টাকা দিয়ে দরিদ্রদের ঈদের নাস্তা ঈদ উপহার দিচ্ছেন সূচি-শায়েদ। ছবি: বাংলানিউজ

পাথরঘাটা (বরগুনা): ঈদে পছন্দের পোশাকের জন্য কেউ বাবার কাছে, আবার কেউ মায়ের কাছে আবদার করে। বাবা-মা সন্তানের সে আবদার পূরণও করেন সাধ্যমত। তবে দুই ভাই-বোন সুচি আর শায়েদ ব্যতিক্রম। নিজেদের পোশাক না কিনে দিনমজুর রিকশা চালকসহ হতদরিদ্রদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তারা। 

দুই ভাই-বোন নিজেরা পোশাক না কিনে নানী বুলবুল বেগমের দেওয়া ২০ হাজার টাকা দিয়ে একটি মুরগী, ২ কেজি চিনি, ২ কেজি চিনিগুড়া চাল, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ লিটার তেল, ২ প্যাকেট সেমাই ও একটি ট্যাংক কিনে দিয়েছে ২০জন হতদরিদ্রদের মাঝে। শনিবার (২৩ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে পাথরঘাটা উকিল পট্টিতে ল চেম্বারে এসব বিতরণ করা হয়।

   

পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. জাবির হোসেন ও অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার রনির সন্তান চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা সাজনাইন মারিয়াম সুচি ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র তুশাইব শায়েদ।  

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে মানুষ। তারপর মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে আসে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এ অবস্থায় উপকূলের মানুষের জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুলবুল বেগম প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর অন্যান্য নাতিদের মতো সুচি ও শায়েদকেও ২০ হাজার টাকা ঈদের পোষাক কেনার জন্য দেন। তবে এ বছর নিজেরা পোষাক না কিনে হতদরিদ্রদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ মিলিয়ে দিয়েছে সুচি ও শায়েদ।

নিজেদের পোষাক না কিনে এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে সাজনাইন মারিয়াম সুচির সঙ্গে কথা হয়। সে বলে, আমি পরিবার থেকেই শিখে আসছি। আমার নানা জীবিত থাকাকালীন পাথরঘাটায় অনেক মানুষকে ঈদসহ সবসময় সহযোগিতা করে এসেছেন। আজ আমার নানা বেঁচে নেই। নানী আমার ও আমার ভাইকে ২০ হাজার টাকা দেন ঈদের পোশাক কেনার জন্য। আমরা এ টাকা দিয়ে নিজেদের পোশাক না কিনে দরিদ্রদের মাঝে ঈদের নাস্তা কিনে দিয়েছি। আমরা নানা এবং বাবার এ কার্যক্রম ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখবো।  

কথা হয় অ্যাডভোকেট জাবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি গর্বিত। ওর নানির দেওয়া টাকার সঙ্গে আমরা কিছু যোগ করেছি। এ বয়সে এমন উদ্যোগ নেওয়ায় আমি গর্বিত।  

রিকশা চালক মো. হিরু বলেন, এতো ছোট শিশুদের কাছ থেকে আজ আমরা শিখেছি। ছোট হলেও বড় মনের মানুষ ওরা। আমি একজন রিকশা চালক হওয়ায় নিজেরা পোশাক না কিনে আমাকে ঈদের নাস্তা দিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad