ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা উপেক্ষা করে মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৬ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
করোনা উপেক্ষা করে মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি মরিচ তুলছেন চাষী-শ্রমিকরা: ছবি-বাংলানিউজ

ঠাকুরগাঁও: মহামারি করোনার পরিস্থিতিতেও ঠাকুরগাঁও জেলায় আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি।

তাই কৃষকরা প্রচণ্ড রোদে সকাল থেকে সারাদিন মরিচ তোলা থেকে শুকানো পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাকা মরিচ তুলে মাঠে, পাকা রাস্তায়, মিলের চাতালে, বাড়ি ও বিভিন্ন স্থানে মরিচ শুকানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।

মরিচের বাম্পার ফলন নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুরের মরিচ চাষী ননী গোপাল জানান, এবারে আবহাওয়া ভালো থাকায় ব্যাপকভাবে মরিচের ফলন হয়েছে। তাই আমরা করোনা উপেক্ষা করে সারাদিন মরিচ খেতে পাকা মরিচ তোলার কাজ করি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়নের মোলান খুড়ি গ্রামের মতিউর রহমান জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় অনেক ভালো মরিচের ফলন হয়েছে। কম খরচে বেশি ফলন হয়েছে। অল্প খরচে বেশি লাভ হবে বলে আমরা আশা করি।

উপজেলার মিয়াজী পাড়া গ্রামের সুলতানা জানান, আমরা কৃষকরা অনেক ভালো আছি। সারাদিন আমরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করি। মরিচ, ভুট্টা, পাটসহ বিভিন্ন ক্ষেতে-খামারে প্রখর রোদে আমরা কাজ করছি। আল্লাহর রহমতে খেটে খাওয়া মানুষের করোনা ভাইরাস হবে না বলে আমরা কৃষকরা বিশ্বাস করি। যদি কেউ শহর থেকে গ্রামে আসে তাহলে হয়তো তার জন্য আমরা খেটে খাওয়া মানুষ আর রক্ষা পাবো না। তাই প্রশাসনের কাছে আমরা জোর দাবি জানায়, আমরা গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ দু’মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে জীবন যাপন কাটাতে চায়। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বাইরের মানুষ যেন গ্রামে ঢুকতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এদিকে মরিচ চাষে শুধু চাষিরাই লাভবান নন, বেশি দাম পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন কৃষক, দিনমজুর-সহ ব্যবসায়ীরাও।

ছবি: বাংলানিউজগ্রামের খেটে খাওয়া মানুষরা বউ বাচ্চাসহ সারাদিন মরিচ ক্ষেতে মরিচ তুলে। দিনমজুর রহিমা জানান, আমি প্রখর রোদে সারাদিন মানুষের ক্ষেতে মরিচ তুলি। তাতে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালায়। কি জানি কি একটা রোগ আসছে, রোগটা ধরলে লোক মরছে। এর নাম  নাকি কন্যা (করোনা) ভাইরাস। আমরা তো গ্রামের মানুষ। সারা মানুষের বাড়িতে কাজ করি। দিনে এনে দিনে খাই। আমার গ্রামের মানুষের কারও করোনা ভাইরাস হয় নাই। আমরা দিনমজুর গ্রামের মানুষ ভালো আছি। বাইরে থেকে গ্রামে যেন কোনো লোক না আসে তাই প্রশাসনক দেখিবাকচি (দেখবার জন্য বলছি)।

শ্রমিকরা একেকজনে প্রতিদিন ৩৫-৪০ কেজি মরিচ তুলে। মজুরি হিসাবে প্রতি কেজিতে পায় ৭ টাকা করে। যা থেকে তাদের দৈনিক আয় প্রায় ২০০-৩০০ টাকা।  

এবারে প্রতি বিঘা মরিচের চাষে খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা। প্রতি মণ মরিচ ৯০০০/১০০০০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে জানান চাষিরা।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জানান, এবার ১ হাজার ১১৭ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় হয়েছে মরিচের বাম্পার ফলন। তবে কিছু কিছু এলাকায় ঘনঘন বৃষ্টি হওয়ার কারণে মরিচের গাছ মারা যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে । বিভিন্ন ক্ষেত্রে খামারে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন বি এসরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।