ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মঙ্গল শোভাযাত্রা-ছায়ানটের অনুষ্ঠান বাতিল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
মঙ্গল শোভাযাত্রা-ছায়ানটের অনুষ্ঠান বাতিল

ঢাকা: বৈশাখ উপলক্ষ্যে রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন কিংবা চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রধান দুই আয়োজন। তবে এবার করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে এ দুই আয়োজনের একটিও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। যদিও এর আগে বিকল্প ব্যবস্থায় আয়োজন দু'টি করার কথা জানানো হয়েছিল আয়োজকদের পক্ষ থেকে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাও হচ্ছে না।

সোমবার (৩১ মার্চ) বাংলানিউজকে এমনটাই জানিয়েছেন ছায়ানটের সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন।

ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন নিয়ে ছায়ানটের সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, আমরা আয়োজন যতোই সীমিত করি না কেন, সেখানে মানুষের সমাগম ঘটবে।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষকে আসতে বলা বা মহড়া করতে আসতে বলাটাও সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতিটা এমন হয়ে গেছে, এটা আসলে সম্ভব হচ্ছে না এ বছর।

পুরো আয়োজনটি রেকর্ড করে পহেলা বৈশাখের সকালে টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করার বিকল্প কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটিও এখন সম্ভব নয়। কেননা সেটির জন্যও জনসমাগম তৈরি হয়। আগে আমাদের নিজেদের নিয়ে ভাবতে হবে। ছায়ানট শুধু গান শেখার প্রতিষ্ঠানতো নয়, বরং যেকোনো ক্রান্তিকালে এটি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং এখনও গরিব ও দুস্থদের সাহায্যের মাধ্যমে ছায়ানট সবার পাশে থাকতে চায়।

মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি তো শোভাযাত্রা করার মতো নয়। আমরা শোভাযাত্রায় মানুষকে আহ্বান করি একটি জায়গায় মেলার জন্য। আর এখন এক জায়গায় মিলতে চাওয়া তো একটা আত্মঘাতী কাজ হবে। পরিস্থিতি যা, সেটি আসলে মঙ্গল শোভাযাত্রা করাকে অনুমোদন করে না। এটা আমাদের অনুকূলে নেই।

এদিকে ১৯৬৭ সাল থেকে নিয়মিতভাবে রমনা উদ্যানের অশত্থ গাছের নিচে (যা বটমূল নামে পরিচিত) আয়োজিত হয়ে আসছে ছায়ানটের পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আয়োজন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বছরটি বাদে নিয়মিতভাবে চলেছে রাজধানীবাসীর পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রধান এ আয়োজনটি। এমনকি ২০০১ সালে বোমা হামলার পরের বছরেও এ আয়োজনের ছেদ পড়েনি।

আর ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে প্রথমবারের মতো মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। নিরবচ্ছিন্নভাবে চলা এ আয়োজনে এখন পহেলা বৈশাখের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। যা ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর অস্পর্শনীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয়।

এছাড়া করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে না সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটও। সংগঠনটি প্রতিবছর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ বিষয়ে জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বাংলানিউজকে বলেন, অনুষ্ঠান জীবনের চেয়ে বড় না। মানুষের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে আমরা পহেলা বৈশাখের কোনো আয়োজন করবো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
এইচএমএস/ডিএন/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।