ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

যানবাহন শূন্য এক্সপ্রেসওয়েতে নীরবতা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২০
যানবাহন শূন্য এক্সপ্রেসওয়েতে নীরবতা!

মাদারীপুর: করোনা ভাইরাস আতঙ্কে প্রায় স্থবির হয়ে আছে জনপদ। একান্ত প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। হাট-বাজারের দোকানপাটও বন্ধ থাকছে। অনেকটা ঘরবন্দী হয়ে আছে জনজীবন!

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোলঘেঁষে দেশের অন্যতম 'সৌন্দর্য সড়ক' এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটি চালু হয়েছে কিছুদিন আগে।

শিবচরের পাঁচ্চর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত বিশ কিলোমিটারের ব্যস্ত সড়কটির চিত্রও ভিন্ন আজ। যানবাহন শূন্য! নেই দর্শনার্থীও। যে এক্সপ্রেসওয়ে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের সড়ক সেই এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহন শূন্যতায় ভুগছে। সড়কের সৌন্দর্য দেখতে আসা আশেপাশের মানুষের আগমনে সকাল-বিকাল এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থান মূখোরিত থাকতো। করোনা আতঙ্কে পুরো সড়কজুড়ে যেন শূন্যতার হাহাকার। মাঝে মধ্যে দু'একটি কাভার্ডভ্যানের দেখা মিললেও পুরো সড়ক যেন প্রাণহীন।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দেখা গেছে, দীর্ঘসময় পর পর দুই একটি কাভার্ড ভ্যান যেতে সড়ক দিয়ে। অথচ দক্ষিনপশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার পরিবহন চলাচল করতো এই সড়ক দিয়ে। হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে চিত্র। ব্যস্ত সড়কটি হয়ে আছে অলস যেন!

শিবচরের আড়িয়াল খাঁ সেতু থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রাম পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় পর একটি দুটি গাড়ি আসছে। এছাড়া স্থানীয় ছোট পরিবহনও নেই মহাসড়কে। সাধারণ মানুষেরও দেখা মেলেনি তেমন একটা। মাঝে মধ্যে থ্রিহুইলার (ইজিবাইক ও ভ্যান) এর দেখা মিললেও দূর পাল্লার পরিবহন নেই। এ যেন এক সুনসান জনপদ।

হাজী শরিয়ত উল্লাহ সেতুর টোল প্লাজার এক শ্রমিক জানান, গত দুই-তিন দিন ধরে একেবারেই কমে গেছে পরিবহন। সারাদিন অনেকটা নিরবেই কেটে যায়। '

আতিকুর রহমান নামের টোলপ্লাজা এলাকার এক যুবক বলেন,' মহাসড়কের প্রাণ হলো পরিবহন। আমাদের পরিবহনের শব্দ শুনতে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস। কিন্তু হঠাৎ করেই সবকিছু যেন থেমে গেছে। চমৎকার সড়কটি হঠাৎ করেই নিস্তব্ধ। '

স্থানীয় এক ভ্যান চালক বলেন,' ঘরে বইসা থাকার কায়দা নাই। আমরা দিন আনি দিন খাই। পেটের দায়ে বাইর হইছি রাস্তায়। কিন্তু লোকজন নাই। আইজ মহাসড়কেই ভ্যান উঠাইছি। পুরা রাস্তা ফাঁকা। '

এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান,'দুদিন ধরে একেবারেই কোলাহল নেই। গাড়ির হর্নও তেমন একটা পাই নাই। ঝকঝকা রাস্তা জনশূন্য। '
তারা আরো জানান,'করোনা ভাইরাসের কারনে এলাকার লোকজন বাইরে কম যায়। তাছাড়া বাজারঘাটও বন্ধ প্রায়। '

মহাসড়কের এই নিস্তব্ধতা বেমানান। কোলাহলে মুখোর থাকবে চারপাশ। পরিবহন চলবে আপন গতিতে। এক্সপ্রেসওয়ের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধতা ছড়াবে পরিবহনের যাত্রীরা। আবার ব্যস্ত হয়ে উঠবে চারপাশ। ' এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

গত ১২ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এ সড়ক পথের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে শিবচরের পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত পথের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এই অংশটুকুতে ৫ টি ব্রিজ, ১৩ টি কার্লভার্ট ও তিনটি আন্ডারপাস রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬০৪ ঘন্টা, মার্চ ২৭,২০২০
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।