ঢাকা, শনিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ মে ২০২৪, ১৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিডিআর বিদ্রোহের ১১ বছর: ঝুলছে বিস্ফোরক মামলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
বিডিআর বিদ্রোহের ১১ বছর: ঝুলছে বিস্ফোরক মামলা

ঢাকা: পিলখানা ট্রাজেডির ১১ বছর পূর্ণ হচ্ছে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি)। এই ট্রাজেডির পর দীর্ঘ সময়ে হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টে শেষ হয়েছে। তবে বিস্ফোরক আইনে হওয়া মামলা এখনও ঝুলছে। রাষ্ট্রপক্ষের এক হাজার ৩৪৫ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন ১৪৬ জন।

ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ বকশীবাজার আলীয়া মাদ্রাসা ময়দানে স্থাপিত আদালতে এই মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করেন। আগামী ৮ মার্চ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।

আসামিপক্ষের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও মামলাটি শেষ করতে যথাযথ তৎপরতা নেই রাষ্ট্রপক্ষের। তাই বিচার শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন, সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে, এ বছরের মধ্যেই মামলার বিচারকাজ শেষ হবে।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআরের বিদ্রোহী জওয়ানরা নারকীয় তাণ্ডব চালায় পিলখানায়। তাদের হাতে প্রাণ হারান ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন।  

বিডিআর বিদ্রোহের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরেকটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়। দুই কমিটির প্রতিবেদনে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার বিচার সেনা আইনে করার সুপারিশ করা হলেও উচ্চ আদালতের মতামতের পর সরকার প্রচলিত আইনেই এর বিচার করে।

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দুটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। এর একটি ছিল খুনের মামলা আর অন্যটি বিস্ফোরক মামলা। খুনের মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর ২৭৮ জন খালাস পান। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর এই মামলায় হাইকোর্টের আপিলের রায়ও হয়ে যায়।

অপরদিকে বিস্ফোরক মামলায় ৮৩৪ জন আসামি রয়েছেন। মামলাটি হত্যা মামলার সঙ্গে বিচার কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝ পথে শুধু হত্যা মামলার সক্ষ্য উপস্থাপন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বিস্ফোরক মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করেনি। এক পর্যায়ে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম একপ্রকার স্থগিত করে দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে মামলাটির বিচারকাজ শেষ হতে বিলম্ব হয়।

এই মামলায় আসামিপক্ষের অভিযোগ, মামলাটি শেষ করতে রাষ্ট্রপক্ষ তৎপর নয়। আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের সংখ্যা আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। তবে সেটা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নয়। ২৭৮ জন আসামি এই ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় খালাস পেয়েছিলেন। তারা বিস্ফোরক মামলায়ও আসামি। তাই কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না। তাই আমরা আসামিপক্ষে চাই মামলাটি দ্রুত শেষ হোক। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি শেষ করার ক্ষেত্রে সিরিয়াস নয়।

তবে আসামিপক্ষের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বাংলানিউজকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষে আমরা নিয়মিত সাক্ষী হাজির করছি। অভিযোগপত্রে ১ হাজার ৩৪৫ জন সাক্ষী আছেন। তবে যারা সাক্ষ্য দিতে আসবেন তাদের জবানবন্দি নিয়েই বিচার শেষ করা হবে। এ বছরের মধ্যেই মামলার বিচারকাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ০০২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
কেআই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।