ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির একবছর

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির একবছর

ঢাকা: চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির একবছর বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি)। ২০১৯ সালের এদিন রাত ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণ হারান ৭১ জন। এর মধ্যে তিনটি মরদেহ এখনও শনাক্ত হয়নি। 

চকবাজার এলাকার স্থানীয় চুড়িহাট্টা মসজিদ সংলগ্ন আসগর লেন, নবকুমার দত্ত রোড এবং হায়দার বক্স লেনের ত্রিমুখী মিলনস্থলে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বছর পেরিয়ে গেলেও আগুনের সঠিক উৎপত্তিস্থল ও কারণ এখনও ধোঁয়াশাই রয়েছে।

সেদিনের সেই আগুনে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় স্থানীয় রাজ্জাক ভবন ও ওয়াহিদ ম্যানশন। আরও অন্তত তিনটি ভবনের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয় খাবার হোটেল, দোকানের মতো বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

আগুন লাগার পর ঢাকা ও এর আশেপাশের ১৩টি ফায়ার স্টেশনের অন্তত ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদি এবং প্লাস্টিক পণ্য আগুনের শিখা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে।

সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যা

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার অল্প সময়ের মাঝেই ১০ জন মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর পক্ষ থেকে। তবে প্রাথমিক তথ্যের পর প্রতি মুহূর্তেই ঘটনাস্থল এবং পার্শ্ববর্তী সলিমুল্লাহ ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গগুলো থেকে আসতে থাকে মরদেহের খবর। ঘটনার প্রায় নয় দিন পরেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার খবর প্রকাশ করতে হয় গণমাধ্যমকে।

রাষ্ট্রীয় শোক

নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের পর খোদ রাজধানীতে স্মরণকালের এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও হতাহতের চিত্র নাড়িয়ে দেয় পুরো জাতিকে। ঘটনার প্রাথমিক ধাক্কা সামলে উঠে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী এক দিনের শোক পালন করে জাতি। অর্ধনমিত রাখা হয় জাতীয় পতাকা।

শোক এখনও তাড়িয়ে বেড়ায়

মর্মান্তিক এই ঘটনায় স্বজন হারাদের শোক সবচেয়ে বেশি। স্বজনদের শোক আজও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদের। এক বছর সময় পেরিয়ে আজও সেই ওয়াহেদ ম্যানশন এর সামনে ছবি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক নিহতের স্বজনেরা। কারও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বা পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যও; একেকজনের গল্প আলাদা আলাদা হলেও শোক সবার একই।

ক্ষতিগ্রস্তরা আজও পাননি প্রশাসনের সহায়তা

দুর্ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা আজও পাননি প্রশাসনের সহায়তা। আর্থিক সহায়তা বা সরকারি চাকরির যেসব প্রতিশ্রুতি তাদের উদ্দেশ্যে ছিল প্রশাসনের, সেগুলোও যেন ভুলতে বসেছেন তারা। আর পুরান ঢাকা থেকে সবধরনের রাসায়নিক কারখানা এবং পণ্যের মজুদ সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা থাকলেও অগ্রগতি হয়নি কিছুরই। ঘটনার পর বেশ কদিন তোড়জোড় থাকলেও সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে গেছে সব বুলি।  

এমনই প্রেক্ষাপটে হারানো স্বজনদের আবারও স্মরণ করবেন নিহতের আত্মীয়রা। অন্যদিকে ব্যবসা বাণিজ্য হারিয়ে নিঃস্ব বণিকেরা চেষ্টা করছেন ঘুরে দাঁড়ানোর।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
এসএইচএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।