ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রিফাত হত্যা: সাক্ষ্য দিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ২ জন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
রিফাত হত্যা: সাক্ষ্য দিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ২ জন

বরগুনা: আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজী, সিআইডির আইটি শাখার রাসায়নিক পরীক্ষক রবিউল ইসলাম ও রাজু মিয়া নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পৃথক সময়ে বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে তারা এ সাক্ষ্য দেন। এসময় রাত হয়ে যাওয়ায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর সাক্ষ্য প্রদান চলমান রাখেন বিচারক।

আদালত সূত্র জানায়, সকালে প্রথমে সাক্ষ্য দেন প্রত্যক্ষদর্শী রাজু মিয়া, এরপর ঢাকা থেকে আসা রাসায়নিক পরীক্ষকের রবিউল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। এরপর মধ্যাহ্ন বিরতির পর বিকেল তিনটার দিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম গাজী ৮ জন আসামির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীর বর্ণনা তুলে ধরেন। এসময় রাত হয়ে যাওয়ায় আদালতের বিচারক তার (মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর) সাক্ষ্যপ্রদান চলমান রাখেন। সোমবার তার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

সাক্ষিদের জেরা করেন ঢাকা থেকে সিা আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্লাস্টের একিউএম ফারুক ও বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারি আসলাম। এসময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ভুবন চন্দ্র হাওলাদার ও বাদীর নিয়োজিত আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষ্যগ্রহণের সময় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে আট জনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এছাড়াও জামিনে থাকা আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বরগুনা নারী শিশু আদালতের বিচারক হাফিজুর রহমানের আদালতে এ মামলায় ১৪ জন শিশু আসামির বিচারিক কার্যক্রম চলছে।

জেলা ও দায়রা আদালতে চারজন সাক্ষ্য শেষে সিআইডি ঢাকার ফরেনসিক ল্যাবরেটরি আইটি ফরেনসিক শাখার পুলিশ পরিদর্শক মো. বরিউল ইসলাম বলেন, আমি ১৮ জুলাই তদন্তকারী কর্মকর্তার পাঠানো ফেসবুক বন্ড ০০৭ ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের আলামত প্রোফাইলের স্ক্রিনশট, লিংক, ডাটা ডাউন লোড স্ক্রিনশট এর সফট কপি, পেন ড্রাইভে ভিডিও পরীক্ষা করে ১২৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন ২৫ জুলাই বরগুনা প্রেরণ করি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বাংলানিউজকে জানান, আদালতে যে ৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা সবাই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য। তার মধ্য বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ঢাকা সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরির আইটি শাখার পুলিশ পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বিশদভাবে তার প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেছেন।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে (২৫) গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে তারা। আশপাশের অনেক লোক সন্ত্রাসীদের এ তাণ্ডব দেখলেও একজন ছাড়া তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করেনি কেউ। গুরুতর আহত রিফাত ওইদিনই বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।

এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক রয়েছেন। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি প্রিন্স মোল্লা উচ্চ আদালতের আদেশে এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে মারুফ মল্লিক, আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ, মো. নাজমুল হাসান ও রাতুল শিকদার জয় জামিনে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।