ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মায়ের বুকে সুমি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
মায়ের বুকে সুমি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা মায়ের সঙ্গে বোরখা পরিহীত সুমি/ছবি: বাংলানিউজ

পঞ্চগড়: নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরা সুমি আক্তার অবশেষে মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সুমিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ মাহমুদ  হাসান। 

এসময় পাঁচপীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।  

মেয়েকে ফিরে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেছেন মা মলিকা বেগম।

তিনি বলেন, অনেকদিন পর মেয়েকে দেখে শান্তি লাগছে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। একইসঙ্গে মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সুমির বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বৈরাতী সেনপাড়া গ্রামে। সুমির বাবা রফিকুল ইসলাম, পেশায় একজন দিনমজুর। চার-ভাই বোনের মধ্যে সুমি বড়। দুই বছর আগে আশুলিয়ার চারাবাগের নূরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমির।

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় এয়ার এরাবিয়ার জি৯-৫১৭ ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান সুমি। একই সঙ্গে সৌদি থেকে দেশে ফিরেছেন নির্যাতিত আরও ৯১ নারী গৃহকর্মী। বিমানবন্দরে সুমিকে গ্রহণ করেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক জহিরুল ইসলাম সুমিকে। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে না দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উপ সহকারী পরিচালক আবু হেনা মোস্তাফা কামাল সুমিকে নিয়ে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

তবে বিমানবন্দরে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা সুমির স্বামী নূরুল ইসলাম তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাননি। পরে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আলাদা গাড়িতে তিনিও পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

সম্প্রতি ফেসবুকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের কথা বলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান সুমি। পরবর্তীতে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

ভিডিওটিতে সুমি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি আমার সন্তান ও পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। আমাকে আমার পরিবারের কাছে নিয়ে যান। এখানে আমার ওপর অনেক নির্যাতন হয়। আর কিছুদিন থাকলে হয়তো মরেই যাবো। তাই প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুরোধ আপনারা আমাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যান। ’

বাংলানিউজে এমন খবর প্রকাশের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সুমিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সিরাজুল ইসলামকে নির্দেশ দেন।

এরপর সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে সুমিকে সৌদি আরবের জেদ্দার দক্ষিণ-দক্ষিণে নাজরান এলাকার কর্মস্থল থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশের তত্ত্বাবধানে নাজরান শহরের একটি সেইফ হোমে ছিলেন তিনি।

পরদিন মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে দেওয়া এক চিঠিতে সুমি আক্তারকে দেশে ফেরাতে ট্রাভেল এজেন্সি ‘রূপসী বাংলা ওভারসিজ’কে ২২ হাজার রিয়াল (প্রায় পাঁচ লাখ টাকা) ও প্লেনের টিকিট দেওয়ার প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে নাজরান শহরের শ্রম আদালতে সুমিকে দেশে ফেরার ‘ফাইনাল এক্সিট’ দেয়। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।