ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

উপকূলীয় এলাকায় আতঙ্ক, প্রস্তুত প্রশাসন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৯
উপকূলীয় এলাকায় আতঙ্ক, প্রস্তুত প্রশাসন বরগুনায় চলছে মাইকিং

বরিশাল: শক্তি সঞ্চয় করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। যার প্রভাবে গোটা বরিশাল বিভাগজুড়েই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করেছে। বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। 

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যার পরে মোংলা ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানোর পরে বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও পিরোজপুরের উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। যদিও এসব এলাকায় উপজেলা প্রশাসন স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দিনভর ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সতকর্তামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে।

প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ভবন, পাকা ও নিরাপদ স্থাপনা।  

সকাল থেকে দফায় দফায় বিভাগের ছয় জেলার প্রশাসন সভা করেছেন। প্রতিটি জেলা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।  

জেলা প্রশাসকরা সভার মাধ্যমে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় তারা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক থাকা আর নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

এদিকে ভোর থেকেই গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলারগুলো উপকূলে নিরাপদে আশ্রয়ে আসতে শুরু করে এবং দুপুর নাগাদ বেশরিভাগ ফিশিং বোট নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার খবর জানিয়েছেন বোট মালিক ও জেলেরা। তবে ঢেউয়ের তোড়ে কুয়াকাটার ঝাউবাগান সংলগ্ন এলাকায় এফবি কুলসুম নামে মাছ ধরা ট্রলার থেকে পড়ে বেল্লাল হোসেন (৪০) নামে এক জেলে নিখোঁজ হয়েছেন।  

কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরা বোটগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য মৎস্যবন্দর আলীপুর, মহিপুর, ঢোস, মৌডুবি শিববাড়িয়া নদসহ বিভিন্ন পোতাশ্রয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

বিকেল থেকে বিভাগের অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট আকারের সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। ঢাকা থেকে রাতে কোনো লঞ্চ উপকূলীয় জেলাগুলোর উদ্দেশ্যে না এলেও বরিশালসহ আশপাশের জেলা থেকে ঢাকাগামী লঞ্চগুলো যথাসময়ে বরিশাল ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

নভেম্বর মাসে দুর্যোগের কথা শুনলেই উপকূলের মানুষের আতঙ্ক দেখা দেয়। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় এবং ২০০৭ সালে ১৫ নভেম্বর ‘সিডর’ নামের ঘূর্ণিঝড় উপকূল দুমড়ে-মুচড়ে দেয়।  

তবে সিডরের পর থেকে প্রশাসনের তৎপরতায় বিগত সময়গুলোতে যে কোনো দুর্যোগেই প্রাণহানিসহ সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ কম ছিল। আর এবারও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদারকিতে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
এমএস/এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।