ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৩১ মে ২০২৪, ২২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফাহাদ হত্যায় জড়িতদের শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৯
ফাহাদ হত্যায় জড়িতদের শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়, সে বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, ইতোমধ্যে তাদের সবাইকে ছাত্রলীগ বহিষ্কার করেছে। একই সঙ্গে, তাদের গ্রেফতারও করা হয়েছে। এই ঘটনাকে পুঁজি করে কাউকে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না।

বুধবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে টিভি শিল্পী, নাট্যকার ও অনুষ্ঠান নির্মাতাদের সার্বজনীন সংগঠন এফটিপিও’র (ফেডারেশন অব টিভি প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনস) সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথমত, এ হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।

আমরা প্রথম থেকেই এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কেউ দাবি তোলার আগেই এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা এ ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হবে, তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়, এ জন্য সরকার বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, অতীতেও দেখেছি, কোনো ঘটনা ঘটলে একটি মহল ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালায়। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালায়। এখনো সেই চেষ্টা হচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। তবে, কেউ এ ঘটনাকে পুঁজি করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করবে, সেটি হতে দেওয়া যাবে না।  

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, দেশে অবশ্যই ভিন্নমত থাকবে। ভিন্নমত ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ হতে পারে না। ভিন্নমত থাকবে, সমালোচনাও থাকবে। সমালোচনার জবাব সমালোচনার মাধ্যমে হয়। ভিন্নমতের জবাব নিজের মতপ্রকাশের মধ্য দিয়ে হয়। এর জবাব কোনোভাবেই আক্রমণ করে হয় না। এটা আমাদের সরকার সমর্থন করে না, দলও সমর্থন করে না।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশি ডিটিএইচ কোম্পানিকে বাংলাদেশে ডিভাইস বসিয়ে সম্প্রচার করার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সুতরাং বিদেশি যেসব ডিটিএইচ বিভিন্নজন ব্যবহার করছেন বা যাদের মাধ্যমে ব্যবহার করা হচ্ছে, পুরোটাই অবৈধ। বাংলাদেশে কয়েক লাখ বিদেশি ডিটিএইচ লাগানো হয়েছে। এগুলো বিদেশ থেকে কেনা হয়। বাংলাদেশের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে যায়, সেখান থেকে কেনা হয়। বাংলাদেশের এগুলো যারা ব্যবহার করে, তাদের কাছ থেকে এক বছরের ফি নিয়ে নেওয়া হয়। কারণ, কোম্পানি বিদেশি হওয়ায় প্রতিমাসে ফি নেওয়া কঠিন। সেসব টাকাও আবার হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়। এভাবে দেশ থেকে প্রতিবছর সাতশ’ থেকে আটশ’ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এটি চলতে দেওয়া যায় না। আমরা এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি, ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। যারা এসব ডিভাইস ব্যবহার করছেন, তাদের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব সরিয়ে নিতে হবে। এরপর আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, এতদিন বাংলাদেশের টেলিভিশনে যেসব বিদেশি সিরিয়াল চলছিল, সেগুলোর জন্য অনুমতি নেওয়ার কোনো বালাই ছিল না। অনুমতি ছাড়াই বিদেশ থেকে সিলিয়াল এনে ডাবিং করে বিভিন্ন চ্যানেলে চালানো হচ্ছিল। কিন্তু, এটি সমীচীন নয়। তাই, আমরা ইতোমধ্যেই নির্দেশনা জারি করেছি যে, বিদেশ থেকে আনা যেকোন সিরিয়াল চালানোর জন্য সরকারের অনুমোদন লাগবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, একটি বিদেশি সিনেমা আমদানির জন্য অনুমোদন লাগে। সিনেমা তো তিন ঘণ্টা চলে। সেখানে সিরিয়াল ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে। এছাড়া, সিরিয়াল অনেক বেশি মানুষ দেখে। এ জন্য অবশ্যই অনুমোদন লাগবে। বর্তমানে যেসব সিরিয়াল চলছে, সেগুলোর জন্য কর্তৃপক্ষ অনুমোদনের জন্য আবেদন করছে। এসব সিরিয়াল যেন বন্ধ হয়ে না যায়, সে জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দিচ্ছি। তবে, সিরিয়াল যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটা প্রিভিউ কমিটি থাকতে হবে। শিগগিরই একটা প্রিভিউ কমিটি করে দেবো। এই কমিটির মাধ্যমে এগুলো অনুমোদন দেওয়া হবে।

ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক কয়েকটি চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্যের সূত্র ধরে শিবির সন্দেহে আবরার ফাহাদকে গত রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে রুমে নেয় বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ বুয়েটের শেরেবাংলা হলের শিক্ষার্থীদের। ওই ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ গ্রেফতার দশজনকে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৯ 
জিসিজি/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।