ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বয়সের বাধা করছে জয়, এ বয়সে খেলতে নাহি ভয়!

শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৯
বয়সের বাধা করছে জয়, এ বয়সে খেলতে নাহি ভয়! ফুটবল খেলছেন প্রবীণরা। ছবি: বাংলানিউজ

পাথরঘাটা (বরগুনা): প্রত্যেকের বয়স ৬৫ বছরের ওপরে। বয়সের ভারে অনেকেই ন্যুব্জ প্রায়। এ বয়সে খেলার সঙ্গে সম্পর্ক মানায় না। খেলাকে সবাই একটা নির্দিষ্ট বয়সের ফ্রেমে বাঁধেন। শুরুর সময় নির্ধারিত না হলেও শেষটা সবাই মানেন। শিশু থেকেই নানা খেলার মাধ্যমে সবাই বড় হয়। একটা বয়স পর্যন্ত অনেকেই খেলেন। এরপর ছেড়ে দেন। কিন্তু সেসব খেলা ছেড়ে দেওয়ার কয়েক বছর পর বৃদ্ধ বয়সে এসে খেলায় মেতে উঠলেন প্রবীণরা।

বার্ধক্যের কারণে খেলা অনেকটা এলোমেলো হলেও বয়সের বাধা জয় করার জন্যই অগ্রজরা খেলায় মেতে উঠে। যদিও এ খেলা প্রতিযোগিতামূলক না হলেও অগ্রজদের একঘেঁয়েমি এবং মানসিকতার পরিবর্তনের জন্য এ খেলার উদ্যোগ নেন বেসরকারি সংস্থা সংগ্রাম।

এ ব্যতিক্রমই খেলা দেখতে পাথরঘাটা কলেজ মাঠে উৎসুক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অন্তত প্রবীণ দিবসে প্রবীণদের শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাদের মানসকিতার পরিবর্তনের এমন প্রয়াস।

১ অক্টোবর বিশ্ব প্রবীণ দিবসকে কেন্দ্র করে তাদের শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজন করা হয় প্রবীণ প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট। ষাটোর্ধ্ব খেলোয়াড় বয়সে ন্যুব্জ হলেও খেলার মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতার কোনো ঘাটতি ছিল না। মনে হয় যেন সেই নবীন বয়সের খেলায় মেতে উঠেছে। কিন্তু বয়সের সঙ্গে খেলার মিল না থাকলেও রেফারির বাঁশির শব্দ আর ফুটবলের পিছু ছাড়ছেন না কেউই। একটি বল যেন অগ্রজদের বড় সম্পদ। মনোবল থাকলেও শারীরিক অক্ষমতার কারণে যৌবনকালের মতো ফুটবলের সঙ্গে দৌড়াতে পারছে না। তারপরেও চেষ্টা...। বলের সঙ্গে পা রাখতেই পড়ে যাচ্ছে, তারপরেও থেমে নেই। নির্ভয়ই ছুটে চলছে মাঠে, বলটি নিয়ে গোল দিতে যেতেই হবে। অগ্রজদের এমন খেলা দেখতে আবাল-বৃদ্ধ বনিতা সকলেই এসেছেন। ফুটবল খেলছেন প্রবীণরা।  ছবি: বাংলানিউজপ্রবীণদের এমন ব্যতিক্রমই খেলার আয়োজন সংগ্রামের নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী মো. মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রবীণদের পিকেএসফের সহযোগিতায় বয়স্কদের ভাতা দিয়ে আসছি। তাছাড়া অক্ষম বৃদ্ধদের হুইল চেয়ার দিচ্ছি। প্রবীণদের একটু আনন্দ দিতে এবং তাদের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে তাদের নিয়ে ফুটবল খেলার আয়োজন করেছি।

পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ বাংলানিউজকে বলেন, ফুটবল খেলা গ্রামীণ ঐতিহ্য। বয়সের ভারে ক্রমান্বয়ে এ খেলা থেকে এড়িয়ে যেতে হয়। বৃদ্ধ বয়সে এসে এ খেলার প্রতি মনোনিবেশ থাকলেও শরীরের সঙ্গে মানায় না। তবে, প্রবীণদের ফুটবল টুর্নামেন্ট সত্যিকার অর্থে ব্যতিক্রম। ফলে অগ্রজদের যেমন মানসিকতার বিকাশ ঘটছে তেমনি একঘেঁয়েমিও মনোভাবটাও কমছে।

এদিকে বিশ্ব প্রবীণ দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) সংগ্রামের আয়োজনে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু করে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষণ শেষে পাথরঘাটা কলেজ মাঠে এসে শেষ হয়।

প্রবীণদের ফুটবলা ও হুইল চেয়ার বিতরণের প্রধান অতিথি ছিলেন পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির।

বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও বরগুনা জেলা পরিষদের সদস্য এম এ খালেক, পাথরঘাটা কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম মল্লিক, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad