ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পাথরঘাটায় ১২ জেলেকে পিটিয়ে আহত, নিখোঁজ ১

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯
পাথরঘাটায় ১২ জেলেকে পিটিয়ে আহত, নিখোঁজ ১ আহত এক জেলেকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

পাথরঘাটা (বরগুনা): বরগুনার পাথরঘাটার বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এফবি আল্লাহর দান নামের একটি মাছ ধরা ট্রলারের ১২ জেলেকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে খালে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আল আমিন (৩০) নামের এক জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

আহতদের মধ্যে কবির মাঝি ও মাছুমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।  

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে পাথরঘাটা পৌরশহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তালতলা ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

তবে অভিযুক্ত তান্না মল্লিকের দাবি, উল্টো তাদের জেলেদের মারধর করা হয়েছে। তার তিন জেলেকে পিটিয়ে আহত করায় পাথরঘাটা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

এফবি আল্লাহর দান ট্রলারের মালিক আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে এসে সকালে বিএফডিসি ঘাটে মাছ বিক্রি করার উদ্দেশ্যে ট্রলার নোঙর করার সময় পাশে থাকা মিজান মল্লিকের মালিকানা এফবি মা-বাবার দোয়া ট্রলারে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি পর ধাক্কাধাক্কি হয়। এসময় বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সস্পাদক দুলাল মাস্টার পরিস্থিতি শান্ত করেন। মাছ বিক্রি করে ট্রলারটি তালতলা ব্রিজের পাশের ঘাটে নোঙর করে রাখা হয়।  

কিছুক্ষণ পর ওই ঘটনার জের ধরে মিজান মল্লিকের ছেলে তান্না মল্লিকসহ ভারাটে সন্ত্রসী বাহিনী লোহার পাইপ ও রড দিয়ে পিটিয়ে ১২ জনকে আহত করে। এসময় কয়েকজন জেলে ট্রলার থেকে ছিটকে খালে পড়ে। পরে আল আমিন নামের একজন জেলে নিখোঁজ হয়। এর কিছুক্ষণ পর বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন পাথরঘাটায় এলে আবুল হোসেন ফরাজী তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। এসময় সঙ্গে থাকা পাথরঘাটা ওসি শাহাবুদ্দিনকে ঘটনার বিষয়ে দ্রুত মামলা নিয়ে আইনগত মামলার নেওয়ার নির্দেশ দেন।  

প্রত্যক্ষদর্শী ট্রলার মালিক রফিক মিয়া জানান, এই মিজান মল্লিকের ট্রলারের জেলেরা সাগরে মাছ শিকার করতে গেলে অন্য জেলেদের সেই স্থান থেকে চলে যেতে হয়, এরকম গত ৮ সেপ্টেম্বর সাগরে মাছ ধরার সময়ে আমার ট্রলারের জেলেদের ওপর ইট নিক্ষেপ করে তারা।

এবিষয়ে মিজান মল্লিক মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে মারধর করেনি তবে, আবুল হোসেন ফরাজীর ট্রলারের জেলেরা আমার ট্রলারে ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ফেলেছে, আবার আমার জেলেদেরকেও মারধর করেছে। আমি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতিকে জানিয়েছি।  

এদিকে বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি আবুল হোসেন ফরাজীর ট্রলারের ১২ জেলেকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে। এরমধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর ও আল আমিন নামের এক জেলেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আলম মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম কম্পানি বলেন, গত বছরও এই বাহিনী অপর এক ট্রলারের জেলেদের মারধর করেছে। সে সময় সমিতির পক্ষ থেকে সমাধান করার চেষ্টা করলেও তান্না মল্লিকের কারণে ব্যর্থ হই।  

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন বলেন, জেলেদের মারধরের কথা শুনেছি। এসপির কাছে মৌখিক অভিযোগ করায় তিনি মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। লিখিত অভিযোগ পেলেই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।