ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা: ফের পেছালো সাক্ষ্যগ্রহণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা: ফের পেছালো সাক্ষ্যগ্রহণ ফাইল ছবি/বাংলানিউজ

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজন আদালতে অনুপস্থিত থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি।

সোমবার (২২ জুলাই) স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আদালত নং-২ এর বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামিদের অনুপস্থিতির কারণে আগামী ২২ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে সপ্তম বারের মতো মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পেছালো।

এদিন জাহিদুল হক তামিম ও আনোয়ার হোসেন আদালতে উপস্থিত থাকলেও চার্জশিটভুক্ত তিন আসামি রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান এবং মো. আব্দুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজকে হাজির করা হয়নি।

কিশোরগঞ্জ জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি জানান, প্রতিটি ধার্য তারিখে জেলখানায় আসামিদের হাজির করার জন্য হাজিরা পরোয়ানা (পিউব্লিউ) প্রেরণ করা হয়। একমাত্র জাহিদুল হক তামিম ব্যতীত অন্য আসামিরা হলি আর্টিজানসহ বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলা মামলায় বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে আদালতে হাজির করতে হয় বিধায় ধার্য তারিখে কিশোরগঞ্জ কোর্টে সব আসামিদের একসঙ্গে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না।  আর এ কারণেই সাক্ষ্যগ্রহণ বিলম্বিত হচ্ছে।

২০১৬ সালের ৭ জুলাই (ঈদুল ফিতরের দিন) সকালে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে পুলিশ চেকপোস্টে জঙ্গি হামলা করে নব্য জেএমবির সদস্যরা। এসময় হামলায় চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যসহ ১৪ পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কনস্টেবল জহিরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এছাড়াও কনস্টেবল আনসারুল হককে ময়মনসিংহ সিএমএইচে নেওয়ার পর ওই দিনই দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

জঙ্গি হামলার পরপরই হামলাকারী জঙ্গিদের ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ ও র‌্যাব। অভিযানে জঙ্গি আবির রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জঙ্গি আবিরের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। এছাড়াও পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলির সময় শোলাকিয়ার সবুজবাগের নিজ বাসায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঝর্ণা রাণী ভৌমিক নামে এক গৃহবধূ মারা যান। ওই সময় র‌্যাবের হাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অপর জঙ্গি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকার শফিউল ইসলাম ধরা পড়ে। এসময় কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা এলাকার জাহিদুল হক তানিম নামে এক যুবকও আটক হয়। পরবর্তী সময়ে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শফিউল মারা যায়।

২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুর রহমান তদন্তশেষে পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এ জঙ্গি হামলায় ২৪ জনের সম্পৃক্ততার কথা উঠে আসলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় ১৯ জন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় অভিযোগপত্রে আসামির তালিকা থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় গত বছরের ২৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতে পাঁচ জঙ্গি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাজিব গান্ধী, আব্দুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, আনোয়ার হোসেন ও জাহিদুল হক তানিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

জঙ্গি মিজান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবপুর উপজেলার হাজারদিঘা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে, রাজিব গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার পশ্চিম রাঘবপুর ভূতমারা গ্রামের মৃত মাওলানা ওসমান গণির ছেলে, সোহেল মাহফুজ কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীর সাদপুর কাতলিপাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে, আনোয়ার গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পান্থাপাড়া গ্রামের মৃত হাকিম উদ্দিন আকন্দের ছেলে এবং তানিম কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে।

২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর আসামিদের উপস্থিতিতে স্পেশাল ট্রাইবুনাল আদালতে চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

বাংলাদেশ সময় : ০৪৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ