ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যমুনার পানি বাড়ছেই, সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
যমুনার পানি বাড়ছেই, সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি মালামাল সরাতে ব্যস্ত পানিবন্দি পরিবারের সদস্যরা। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: যমুনাসহ সিরাজগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। যমুনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ হুড়াসাগর নদীর পানিও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া বাড়ছে ফুলজোড় ও করতোয়া নদের পানি। নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে।

এতে বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার লাখো মানুষ।  

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে যমুনা নদীতে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রভাবিত হচ্ছে। কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি। হুড়াসাগর নদীর শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।  

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার নদীবেষ্টিত অঞ্চলগুলোর ২২ হাজার ২শ’ ১২টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের প্রায় দেড় লাখ মানুষ।  

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে কাজিপুর উপজেলায় মেঘাই আটাপাড়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ রিং বাঁধ ধসে মেঘাই, নতুন মেঘাই, পাইকরতলী, পলাশবাড়ী ও আটাপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এসব এলাকার স্কুল ও মাদ্রাসায় পানি ঢুকে পড়েছে। এদিকে ডুবে গেছে কাজিপুর-ধুনট রাস্তার প্রায় আধা কিলোমিটার।  পরে রাতেই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ওই এলাকার মানুষের জানমাল উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনেন।  

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রণজিত কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে পানি কমে আসবে বলে আশা করেন তিনি।  

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুল হক বাংলানিউজকে বলেন, জেলার প্রায় ৬ হাজার ৪শ’ হেক্টর পরিমাণ জমির পাট, রোপা আমন, আউশ ও সবজির ক্ষেতে পানি উঠেছে। তবে এখনো কোনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি।  

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, যমুনার পানি বাড়ার কারণে চরাঞ্চল অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচটি উপজেলার ৯৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের ২১ হাজার ৫৫২ পরিবারের প্রায় লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ৪৯৪ টন চাল ও ৮ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে এগুলো বিতরণ করা হবে।  

বাংলাদশে সময়: ০৫০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
এমকেআর/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad