ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিগগিরই জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি পাবে বাংলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
শিগগিরই জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি পাবে বাংলা বক্তব্য রাখছেন আ ক ম মোজাম্মেল হক। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: শিগগিরই বাংলা জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ২০০২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি এনে দেয়। এবার, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার। 

শুক্রবার (১২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিশ্ববাংলা সাহিত্য নিকেতন আয়োজিত আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৯-এ কবিতা পাঠ গুণীজন সম্মাননা ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, সাহিত্যকে দেয়াল দিয়ে ভাগ করা যায় না।

পাকিস্তান-আমলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা পড়ানো বন্ধ করে দেয় আয়ুইব খান। কিন্তু, ১৯৬১ সালে আয়ুইব খানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে রবীন্দ্র জয়ন্তী উদযাপন করা হয়। এ বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে সবাইকে কাজ করতে হবে। আমাদের মনের ভাষা সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারলেই বাংলা ভাষা স্বার্থক হবে।

তিনি বলেন, বাংলা পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ ভাষা, যা শত শত বছর ধরে সমাদৃত হয়ে আসছে। তাই তো, কবি-সাহিত্যিকরা বলে গেছেন, যারা বাংলায় জন্ম নিয়ে বাংলা ভাষাকে উপেক্ষা বা অবজ্ঞা করে, তাদের এখানে থাকার অধিকার নেই, তাদের জন্ম নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।  

মন্ত্রী বলেন, আমরা অন্যের ভাষা শিখব, তবে নিজের ভাষাকে অবজ্ঞা করে নয়। মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার অন্যতম উদাহরণ। তিনি নিজের ভাষাকে অবহেলা করে অন্য ভাষায় সাহিত্য রচনা করে ব্যর্থ হয়ে, আবার মাতৃভাষায় ফিরে এসেছেন।

পশ্চিমবঙ্গে বাংলার ব্যবহার কমে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এখন বাংলার চেয়ে হিন্দি বেশি ব্যবহার হয়। হিন্দি তাদের জাতীয় ভাষা, সেটা তারা ব্যবহার করবে। তবে, নিজের মায়ের ভাষাকে অবজ্ঞা করে নয়। ভারতের সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে, প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ ভাষা ব্যবহার করতে পারবে। তাই, ওপার বাংলার মানুষের কাছে অনুরোধ, তারা যেন বাংলা ভাষা ত্যাগ না করেন।

প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহা।  

বক্তব্যে তিনি বলেন, পৃথিবীর সব শিল্পের মধ্যে কবিতা একমাত্র বিশুদ্ধ শিল্প। কারণ, এখানে শুধু কবিদেরই স্পর্শ থাকে। কবি একা নিভৃতে কবিতা লেখেন, যা পৃথিবীতে যুগে যুগে সমাদৃত হয়। এক লাইন দিয়েও কবিতা হয়। কবিতা হচ্ছে ক্লাসিক্যাল বিষয়। হৃদয় থেকে আসা শব্দ দিয়ে কবিতা তৈরি হয়। বাহ্যিক দিক দেখে কবিতা হয় না। আর, কবিরা কখনো সাবেক হন না। সেজন্য, বিশুদ্ধ চিন্তা-ভাবনা দিয়ে সাহিত্য করতে হবে। তাহলেই তা স্বার্থকতা লাভ করবে।  

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি ও ছড়াকার আসলাম সানি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক সংবাদের চিফ রিপোর্টার সালাম জুবায়ের, গীতিকবি এম আর মুঞ্জু, বিসানির মুখ্য উপদেষ্টা হুমায়ূন কবীর, কবি ও গবেষক গগন ঘোষ, ভারতের কবি ও সাহিত্যিক প্রবীর কুমার চৌধুরী, নেপালের কবি ও সাহিত্যিক রাজেন্দ্র গোরাহাইন প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন আসামের বিশ্ববাংলা সাহিত্য নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা যুথিকা দাস, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান শাহ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আরমান হাফিজ ও কলকাতার বাচিকশিল্পী মধুমিতা বসু।  

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। পরে কবিতা পাঠ ও গান পরিবেশিত হয়। শেষে, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
জিসিজি/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।