ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গুদাম কর্মকর্তার ডাকেও ধান বিক্রি করছেন না কৃষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৪ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
গুদাম কর্মকর্তার ডাকেও ধান বিক্রি করছেন না কৃষক খাদ্য পরিদর্শক মো. এরশাদুর রহমান

নেত্রকোণা: কৃষকের স্বার্থে চলতি মৌসুমে প্রথম ধাপের তারিখ শেষ না হতেই এবার দ্বিতীয় দফায় নির্ধারিত বা ন্যায্যমূল্যে ধান (প্রতিকেজি ২৬ টাকা) সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে সরকার।

তবে নেত্রকোণার সদর উপজেলার ঠাকুরাকোণা সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মতে একাধিকবার ডাক পেয়েও কৃষকরা অনীহা জানিয়ে গুদামে ধান বিক্রি করতে আসছেন না।

সেক্ষেত্রে প্রথম ধাপের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ তথা কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি এখনও।

এর মধ্যে দ্বিতীয় দফার ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে ঠাকুরাকোণা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাদ্য পরিদর্শক মো. এরশাদুর রহমান খান বাংলানিউজকে এমন তথ্য জানান।

তিনি জানান, ঠাকুরাকোণা খাদ্যগুদামের আওতাধীন সদর উপজেলার ‘সিংহের বাংলা’ ও ‘ঠাকুরাকোণা’ নামে রয়েছে দুইটি ইউনিয়ন। দুইটি ইউনিয়ন থেকে ধান বিক্রির জন্য দুই দফায় চারশো কৃষক তালিকাভুক্ত হয়েছেন। প্রতি ইউনিয়নের একশো কৃষকের জন্য পঞ্চাশ মেট্রিকটন বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

তালিকাভুক্ত কৃষকরা প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের হিসেবে সরকারের কাছে মোট দুইশো মেট্রিকটন ধান বিক্রি করতে পারবেন। অথচ প্রথম দফার লক্ষ্যমাত্রাই (১০০ মে.ট) এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি। কৃষক ধান বিক্রিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে গুদামে আসছেন না।

কৃষকদের বরাত দিয়ে অনাগ্রহের কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে খাদ্য কর্মকর্তা এরশাদ আরো জানান, সরকারি নির্দেশ মতে একজন কৃষক ২৬ টাকা কেজি দরে প্রতি সাড়ে ১২ মণ ধান গুদামে বিক্রি করতে পারবেন।

মাথাপিছু ধান বিক্রির পরিমাণ কম হওয়ায় কৃষকের বাড়ি ও সরকারি গুদামের দূরত্বের প্রশ্নে বহন খরচের হিসেব মিলিয়ে কৃষক ধান বিক্রিতে আগ্রহ হারিয়েছেন।

এছাড়াও সরকার যখন ধান সংগ্রহ শুরু করে এর প্রভাব পড়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে। সরকার ধান কেনা শুরুর পর থেকেই লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়ে গেছে ধানের বাজারমূল্য। অনেক কৃষকই এখন ইচ্ছেমত বাজারে ধান বিক্রি করছেন।

ধান কেনার ক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে স্থানীয় খাদ্য অধিদফতর বা গুদামের ভূমিকা সম্পর্কে ওই খাদ্য কর্মকর্তা জানান, কৃষক ধান বিক্রি করতে না আসার বিষয়টি নিয়ে দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

কার্ডধারী কৃষক আলী উছমান, আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, দশ/বার মণ ধান বিক্রি করতে গিয়ে ধান গুদামে টেনে নিতে যে খরচ হবে সেই হিসেবে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেয়া ভালো। গড়ে হিসেব একই হবে।  

সরকার বাজারের চেয়ে বেশি দাম দেবে ঠিক আছে কিন্তু সেই টাকা তো ভ্যান ভাড়াতেই চলে যাবে। সরকারের কাছে যদি বেশি পরিমাণে ধান বিক্রি করা যেত তবে তা গুদামে টেনে নিলেও পুষিয়ে যেত বলে মন্তব্য করেন ওই কৃষকরা।

ঠাকুরাকোণা খাদ্যগুদামে রোববার (২১ মে) থেকে প্রথম ধাপে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। প্রথম ও এই দ্বিতীয় ধাপের ধান সংগ্রহ অভিযানের সময়সীমা আগামী সোমবার (৩০ আগস্ট) পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৮ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।