ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঐতিহ্যের সাক্ষী দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৯
ঐতিহ্যের সাক্ষী দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির, ছবি: বাংলানিউজ

কামারহাট (কলকাতা): নানা রংয়ের সাজ-সজ্জা, বাহারি কারুকাজ আর মনোরম পরিবেশ। চারপাশে ভক্ত ও দর্শণার্থীদের আনাগোনা। কেউ ফুল, মিষ্টি, মোমবাতি ও ধুপকাঠিসহ বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করছেন। কেউ ঈশ্বরের প্রার্থনায় ব্যস্ত আবার কেউবা পূজার অপেক্ষায়।

চিত্রটি কলকাতার ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের। মনের বাসনা পূরণ করতে প্রতিদিন লাখো ভক্তদের আগমন ঘটে।

ভক্তনুরাগীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে মন্দির প্রাঙ্গণ।

কলকাতা শহরের অদূরে হুগলি নদীর তীর ঘেঁষে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা এক অনন্য স্থাপনা দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির। প্রায় দেড় শতাধিক বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী মন্দিরটি পশ্চিম উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কামারহাট শহরে ১৮৫৫ সালে স্থাপিত হয়। প্রসিদ্ধ মানবদরদি জমিদার রাণী রাসমণি এ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির, ছবি: বাংলানিউজইতিহাসে কথিত আছে, রাণী রাসমণি দেবী কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির প্রতিষ্ঠাকালে রামকৃষ্ণ পরমহংসের দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায় রাণীকে প্রভূত সাহায্য করেছিলেন। রামকুমারই ছিলেন মন্দিরের প্রথম প্রধান পুরোহিত। ১৮৫৭-৫৮ সালে কিশোর রামকৃষ্ণ পরমহংস এ মন্দিরের পূজার ভার নেন। পরবর্তীকালে তিনি এ মন্দিরকেই তার সাধন ক্ষেত্ররূপে বেছে নেন।

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির গিয়ে দেখা যায়, কালীমাতার মন্দির ছাড়াও অসংখ্য দেব-দেবীর মন্দির। মূল মন্দিরটি নবরত্ন মন্দির। এটি টালিগঞ্জের রামনাথ মণ্ডল নির্মিত নবরত্ন মন্দিরের আদর্শে নির্মিত। মূল মন্দির ছাড়াও রয়েছে ‘দ্বাদশ শিবমন্দির’ নামে পরিচিত বারোটি আটচালা শিবমন্দির। মন্দিরের উত্তরে রয়েছে ‘শ্রী শ্রী রাধাকান্ত মন্দির’ নামে পরিচিত রাধাকৃষ্ণ মন্দির এবং মন্দিরের দক্ষিণে রয়েছে নাটমন্দির। মন্দির চত্বরের উত্তর-পশ্চিম কোণে রয়েছে রামকৃষ্ণ পরমহংসের বাসগৃহ। মূল মন্দির চত্বরের বাইরে রামকৃষ্ণ পরমহংস ও তার পরিবারবর্গের স্মৃতিবিজড়িত আরও কয়েকটি স্থান রয়েছে, যা আজ পুণ্যার্থীদের কাছে ধর্মস্থানরূপে বিবেচিত হয়।
হুগলি নদীর তীর, ছবি: বাংলানিউজকলকাতা শহরে যে কয়টি মন্দির রয়েছে তারমধ্যে অন্যতম দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির। এ মন্দিরে কালীমাতাকে ‘ভবতারিনী’ নামে পূজা করা হয়। সনাতন ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ এখানে এসে মায়ের চরণ দর্শণ করেন। এরআগে, গঙ্গাঘাটে গিয়ে স্নান করে মন পবিত্র করে আসেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভক্তরা এসে পূজা ও প্রসাদ গ্রহণ করেন। মন্দিরের চারপাশ ঘিরে থাকে পুলিশের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা।  

এদিকে, মন্দির ঘেঁষেই দর্শণার্থীদের জন্য একটি পাঠাগার নির্মাণ করা হয়েছে। লোকমাতা রাণী রাসমণি ফাউন্ডশন থেকে এটি নির্মিত হয়। সেখানেও দর্শণাথীরা ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৯
এনটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।