ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অবস্থান কর্মসূচিতে অচল ছাগলনাইয়া সীমান্ত হাট

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
অবস্থান কর্মসূচিতে অচল ছাগলনাইয়া সীমান্ত হাট বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অবস্থান কর্মসূচি, ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচির কারণে অচল হয়ে পড়েছে ফেনীর ছাগলনাইয়ার রাধানগর ইউনিয়নের মোকামিয়ার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাট।

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) চোরাচালান ও ‘ভারতীয় কর্তৃপক্ষের একতরফা নীতি’ বন্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সীমান্ত হাটের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ফলে ওই হাটে বাংলাদেশের কোনো ক্রেতাও প্রবেশ করতে পারেননি।

গেলো সপ্তাহের হাটের দিনও তারা একই কর্মসূচি পালন করেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে দুই দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেনীর মোকামিয়ায় ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শ্রীনগরের সীমান্তে এ হাট চালু করা হয়। শুরুতেই কীভাবে ব্যবসা হবে, কারা ক্রেতা হবে, একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ কত টাকার পণ্যসামগ্রী কিনতে পারবেন ইত্যাদি বিষয়ে নীতিমালা হয়। দুই দেশের ২৭ জন করে ব্যবসায়ী হাটের দিন দেশিয় পণ্য নিয়ে এখানে যাবেন। দুই দেশের হাটের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে ৬০০ জন ক্রেতা এবং এর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯০০ করে ভিজিটর মিলিয়ে মোট এক হাজার ৫০০ করে বাংলাদেশ-ভারতের তিন হাজার ক্রেতা এ হাটে যেতে পারবেন।

ক্রেতারা জনপ্রতি সাত কেজি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কিনতে পারবেন। এছাড়া সর্বোচ্চ ২০০ ডলারের পণ্য কিনতে পারবেন একজন।  

কিন্তু ‘ভারতীয় কর্তৃপক্ষের একতরফা বাণিজ্য নীতি’র কারণে হাট চালু হওয়ার অল্প কিছুদিন পরই সেদেশের ৯০০ ভিজিটরের প্রবেশ নিষেধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া হাটের আশপাশের লোকজন বাংলাদেশি পণ্যসামগ্রী কিনে ভারতে যাওয়ার সময় সেদেশের সীমান্তরক্ষীরা এক সপ্তাহ খাওয়া বা ব্যহারের চেয়ে বেশি জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে কি-না তা খতিয়ে দেখেন।

তাদের এমন কড়াকড়ির কারণে যে সামান্য সংখ্যক ভারতীয় বাজারে আসে, তারাও বাংলাদেশি পণ্যসামগ্রী কিনতে চায় না।

অপরদিকে, হাটে বিক্রির জন্য নির্ধারিতগুলোর বাইরেও বহু পণ্য নিয়ে আসেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ অংশে কোনো কড়াকড়ি না থাকায় জেলা শহরসহ নানা স্থানের ক্রেতারা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য পাইকারি ও খুচরা দরে কিনে নিজেদের দোকানে মজুত করে বিক্রি করে থাকেন। এসব বিষয় বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে প্রতিকার চেয়ে আসছেন।

দীর্ঘদিন পরও এসব সমস্যার কোনো সন্তোষজনক সমাধান না আসায় গত রোববার সীমান্ত হাটের ব্যবসায়ীরা ফেনী জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজজামানের কাছে স্মারকলিপি দেন।

সীমান্ত হাটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান বাংলানিউজকে জানান, শেষ পর্যন্ত কোনো প্রতিকার না পেয়ে তারা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন এবং গত দুই হাটবারে এখানে কোনো বেচাকেনা হয়নি।

ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সীমান্ত বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আক্তার উন নেছা শিউলী বাংলানিউজকে বলেন, সীমান্তের অপর অংশে কিছুদিন ধরে সেদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যে ভিজিটর আসতো, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সেখাকার সীমান্তরক্ষীদের ভূমিকাও বাংলাদেশি পণ্য কিনে নেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

‘এসব বিষয় সমাধানের জন্য সম্প্রতি দুই দেশের সীমান্ত বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে সমস্যাগুলো তুলে ধরে প্রতিকারও চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও সমাধান হয়নি। ’

তবে তিনি প্রত্যাশা করেন ভারতীয় পক্ষ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে। এছাড়া বাংলাদেশ অংশেও যাতে ক্রেতারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিসপত্র কিনে বাইরে নিয়ে দোকানে বিক্রি করতে না পারেন, সে বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) ব্যবস্থা নিতে জানানো হয়েছে।

একইসঙ্গে মূল সড়ক থেকে যেনো কোনো গাড়ি বর্ডার বাজার পর্যন্ত যেতে না পারে সে ব্যবস্থাও নিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
এসএইচডি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।